আজ আধুনিক বাঙালি কবি বিষ্ণু দে’র প্রয়াণ দিবস। বিষ্ণু দে ছিলেন ইংরেজি ভাষা সাহিত্যের বিশিষ্ট অধ্যাপক ও কল্লোল যুগের অগ্রণী কবি। ১৯৮২ সালে আজকের দিনে তিনি প্রয়াত হন।
মনে পড়ল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একদা আরেক অগ্রণী কবি টমাস স্টার্নস এলিয়টের বিখ্যাত কবিতা “জার্নি অফ দি ম্যাজাই” অনুবাদ করেছিলেন। সেকথা মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে গেল। মনে পড়ল আধুনিক বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা কবি বিষ্ণু দে’র জন্মদিনে আমি সে কথা ভেবে পোস্ট দিয়েছিলাম।
Journey of the Magi নামে তেতাল্লিশ লাইনের একটি কবিতা লিখেছিলেন ব্রিটিশ কবি টমাস স্টার্নস এলিয়ট (১৮৮৮ – ১৯৬৫)। সেই কবিতা ১৯২৭ সালে প্রকাশ পেয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর “পুনশ্চ” কাব্যগ্রন্থে এই কবিতাটির একটি অনুবাদ সংকলন করেন।
এই অনুবাদ সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুজ বাংলা আধুনিক কবিরা একটু যুক্ত রয়েছেন।
ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক বিষ্ণু দে ছিলেন কল্লোল যুগের অগ্রণী কবি। বাংলাভাষার আধুনিক কবিদের সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বন্দ্ব মধুর সম্পর্ক ছিল। কবিতা কী, কেন, কবিতায় আধুনিকতা ঠিক কী, তা নিয়ে অনেক আলাপ ও বিতর্ক হত। কিন্তু অনুজদের তরফে সম্পর্কের মূল সুরটা ছিল গভীর শ্রদ্ধার।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুনশ্চ ও লিপিকা আর তার গদ্যবুনোট দেখে বিষ্ণু দে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
তিনি “পুনশ্চ” গ্রন্থের কবিতার গদ্য ধাঁচটা আয়ত্ত করতে চেয়ে এলিয়টের “Journey of the Magi” কবিতাটির স্বকৃত অনুবাদ কবির কাছে পাঠিয়ে দেন। ওঁর প্রার্থনা ছিল ওঁর অনুবাদের সাথে পুনশ্চের গদ্যবুনোটের একটা মেলবন্ধন করে দেখিয়ে দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ বিষ্ণু দে কৃত সেই এলিয়টীয় কবিতার অনুবাদ আত্মস্থ করে “তীর্থযাত্রী” শীর্ষক একটি কবিতা লেখেন। বিষ্ণু দে তাঁর স্বকৃত অনুবাদের নাম দিয়েছিলেন “রাজর্ষিদের যাত্রা”।