কবিতায় মঙ্গলা দত্ত রিমি

ইতি টানলাম
সেদিন যখন তোমার দুচোখে তাকিয়েছিলাম, দেখেছিলাম নীলাম্বুর অথৈ ঢেউ।
দেখেছিলাম অচিন পাখির ছন্দ নীড়, সদ্য স্নাত কালো মানিক যার সিক্ত চাহুনি তে আমি হয়েছিলাম মাতোয়ারা।
সেদিন যখন রেল স্টেশন এর অপেক্ষা গৃহে মুখোমুখি বসে বৃষ্টি ভেজা বিকেলে হয়েছিল প্রথম বার্তালাপ, বন্ধুত্বের শুরু টা কি তবে সেখানেই?
ক্রোশ এর পর ক্রোশ পথ হেঁটে আসা আমার কবিতা ছুঁয়েছিল তোমার বুকের বাঁ পাশটা।
তুমি বলেছিলে তোমার আমার গল্পকথা মিলে সৃষ্টি হবে নতুন এক উপন্যাস।
আমি তুলে রাখি আমার সমস্ত কিছুর পাণ্ডুলিপি তোমার উপন্যাস এর সংলাপ লিখব বলে।
বহুকাল ধরে সঞ্চিত অপেক্ষার কথা মালা এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে আমার একাকিত্ব ভরা ঘরের মেঝে।
যে উচ্ছাসে তুমি আমায় সিক্ত করেছিলে প্রণয় নদীর ঢেউ এ, সেই হিল্লোল এখন সুনামির মতো আছড়ে পড়ে আমার পাঁজর রুদ্ধ মাংস পিন্ডের আবরণে ঢাকা ঊষ্ণ কঙ্কাল এর গায়ে।
তোমার নামে তোলে রাখা উপন্যাস এর
ছেঁড়া পাণ্ডুলিপির পাতায় এখন ধূলোবালির ভীড়। বুকের বাঁ পাশে এখন মেঘেদের আনাগোনা,
দীর্ঘশ্বাস এর পর দীর্ঘশ্বাস, জ্বরের ঘোরে এখন অচেতন দেহ টা পড়ে আছে আমার অসমাপ্ত কাহিনীর মতো।
কলম ছুঁতে চায় না জীর্ণ আঙ্গুল এর ডগা,
যে আঙ্গুল ভাঁজে তোমার আঙ্গুল ধরে রাখত আমার শিল্প, সেই আঙ্গুল এর ফাঁকে এখন শুধুই শূণ্যতা।
উপন্যাস হারিয়েছে তার সংলাপ, অচেতন হাতে এখন আর কলম উঠে না, অসমাপ্ত কাহিনী আজও খুঁজে বেড়ায় তার উন্মুক্ত ক্যানভাস।
আমি ক্লান্ত;
বড়োই ক্লান্ত,
ক্লান্ত আমার পান্ডুলিপি,
ইতি টানলাম আমার অসমাপ্ত কাহিনীর পাতায় সমস্ত কাহিনী জুড়ে এখন যতি চিহ্নেরা ঘুরে বেড়ায়, সমস্ত কাহিনী জুড়ে এখন কেবল যতিচিহ্নের ছাপ
দাড়ি দাড়ি দাড়ি।