কবিতায় করবী খাসনবিশ

অপেক্ষার প্রহর
হেমন্তুের হলুদ বিকেল হয়ে এলো শেষ,
বাতাসে মৃদু মৃদু শিহরণ শীতের আবেশ।
পশ্চিমের ব্যালকনিতে চড়ুইয়ের আনাগোনা,
তারই মাঝে বসে আছে পত্রালী আনমনা।
মনেপড়ে কার্তিকে আউসের গন্ধমাখা দিন,
মনেপড়ে সেই ঝাঁকান বটের ঝুরি বড্ড প্রাচীন।
ছিলনা তখন কোনো বিজলী-বাতির আলো
তবুও সেইসব দিনরাত ছিল অনেক ভালো।
মন ছিল খোলামেলা, ছিলনা কোনো দ্বন্দ্ব,
সবাই সবার সাথে ভাগ করে নিত ভালোমন্দ।
চলেগেছে সেইসব দিন বিদায় নিয়েছে হাতপাখা,
এখন কেউ আর সহজ নয় সবকিছু থাকে ঢাকা।
ছুটছে মানুষ ছুটছে শুধু ছুটছে মোহের পিছে,
পাচ্ছে কী? হারাচ্ছে কতটা উত্তর তোলা আছে।
জীবন-নদীর পাড়ে বসে দেখছি চলমান ছবি,
রঙিন আধুনিক আলোয় দেখায় ঝলমলে সবই।
আলোর ওপরে থাকে অন্ধকার অচেতন মনে, কিছু প্রেম ঘাসফড়িংএর ডানায় ডানায় ঘোরে সংগোপনে।
শীতের অবহেলায় সবুজ পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে,
নব কিশলয় বসন্তের ছোঁয়ায় আগমনের দিন গুনছে।
বদলে গেছে চতুর্দিক্ ঘরে ঘরে ল্যাপটপ দুনিয়া হাতের মুঠোয়,
ডিজিটাল পৃথিবী এখন, মানুষ চাঁদের মাটিতে পা ফেলে পাথর কুড়োয়।
পত্রালী শুধু আজো বসে থাকে নীরবে অন্তহীন অপেক্ষায়,
মানুষের পাশে মানুষের মাঝে তবুও সে একাকী নিরালায়।