হৈচৈ কবিতায় অঞ্জলী মুখার্জি

দুই সেয়ানে কোলাকুলি
চন্ডী তলার বদ্যিখুড়ো। পূজো আর্চা ছিল পেশা।
ধর্ম ভীরু সাত্ত্বিক লোক। ছিল না কোন নেশা।
কোনো সাতে পাঁচে যায় না দেখা থাকে আপন মনে ব্যস্ত।
নিত্য আছে সান্ধ্য ভ্রমণ। ফেরেন, গেলে সূর্যিমামা অস্ত।
রোগ জ্বালা একবারে নাই। এই চার কুড়িতে এসে।
সেদিন কিনা নন্দী ভায়া। শুধান তাঁরে এসে
খুড়ো, আছে কী ফর্মূলাটা। তোমার দীর্ঘ জীবনের?
রূটিন খানা বলবে আমায়। তোমার সারাটা দিনের।
বললে খুড়ো বলতে পারি। পারবে দক্ষিণাটা দিতে।
পাবে আজই এমন দীক্ষা। আগে নেব হাতটি পেতে।
উপায় আমার কোথায় বল। পাইতো কয়টা টাকা।
যজমানিতে চলে নাগো। আছে ঘরে বৌ বেটা।
নন্দী ভায়া শুনে বলে। দশ সের দুধ বেচে।
পাই, সামান্য কয়টি টাকা। আছে, আনাজ কয়টা গাছে।
খুড়ো বলেনঃ সের দুই দুধ। রোজ, পারবে আমায় দিতে?
তবে আগামী কাল এসো চলে হবে হাঁটতে দিনে রাতে।
খাঁটি দুধ যে বড় প্রিয়। কিন্তু নেব আগে হাতে।
দিন কয়েকের মধ্যে ভায়া। উঠলো ফেঁপে ফুলে।
জোর কদমে শরীর চর্চা। সে কি শুধুই যাবে জলে?
বদ্যিখুড়ো আছেন মজায়। দিব্যি দুধে, ভাতে।
তারই সাথে মাছের কারী। পড়ছে তা রোজ পাতে।
হঠাৎ সেদিন সন্ধে বেলা। খুড়োর সাড়া নাই।
বিছানাতে শুয়ে কিনা। শুধুই ছটফটায়।
বদ্যি ওঝা সব ফিরল ঘরে। শেষে গিন্নি বসে ভাবে
লাগাম ছাড়া খাবার খেলে। এর দায় কে নেবে!
এলে ভগবানের ঠাকুরদাদাও। হবেন কিনা ব্যর্থ।
এতদিনের শরীর চর্চা। কি বা এর অর্থ।
খুড়োর একুল ওকুল গেল। মাথায় পড়ল হাত।
লোভের ক্ষোভে ভোগে খুড়ো। হায় রে এমন বরাত!