অণুগল্পে রমেশ দে

সুন্দর
লাবনী ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর। অনেক ছেলেই তার পিছনে থাকে। সে এখন দশম শ্রেণীর ছাত্রী। কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে একজন ডাক্তার ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়ে যায়। এরপর তারা সুখে জীবনযাপন করতে থাকে। এখন সে দুই ছেলের মা। জীবন যেন সময়ের গতিতে ভালোই চলছিল। কখন যে বয়স বেড়ে ষাট পেরিয়ে গিয়েছে। সে বুঝে উঠতে পারেনি। এখন সে বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। নিজে কোথাও যেতে পারে না। ডাক্তারের কাছে গেলেও লোকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বয়স্ক মানুষকে কেউ নিয়ে যেতে চায় না। তখন তার মনে পড়ে যায় যৌবনের কথা। স্কুলে পড়ার সময় তাকে মোটরসাইকেলে ঘোরানোর জন্য ছেলেদের লাইন পড়ে যেত। কিন্তু এখন আর কেউ ফিরেও তাকাতে চায় না। সময় যেন মানুষের সাথে চলতে চায়। যে সবার সাথে চলতে চায় সেই তো সময়। যে হঠাৎ করে চলে আসে সে তো অসময়। আর যা জীবনে এক দুই বার আসে, সে তো ভালো সময়। লাবনী সুন্দর ছিল এ তার অতীত তার বিয়ে হয়েছে এ তার বর্তমান। এখন সে আর কারো প্রিয় পাত্র নয় এ তার ভবিষ্যত। বর্তমান যেন অতীতকে ভালোবাসতে চায় না। আর ভবিষ্যত, বর্তমান আর অতীতকে নিয়ে চলতে পারে না। এ যেন ভবিতব্য। এ তিনের মিলিত প্রভাবে জীবজগৎ যেন খেলার পুতুল হয়ে যায়।