সম্পাদকীয়।

প্রেম না থাকলে জীবন শূন্য।
হাওয়ার সাথে গাছের প্রেম। দাপটে নুয়ে পড়ার একটা আনন্দ আছে।হয়ত বা যে নারকোল গাছটি বাজে পোড়া,শূন্যপত্র হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তাঁরও অন্তরে সবুজ থাকে। কেমন টিয়া পাখীরা বাসা বাঁধে তাঁর কোটরে। তাঁর অন্তরের সবুজ মিশে যায় টিয়াদের ডানায়।
মেঘ রোদ্দুরের প্রেম এই আছি, এই নেই লুকোচুরি খেলা । এই প্রচণ্ড রাগে গর্জন করল সমস্ত আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে।এই দুকুল ছাপিয়ে এল প্রেমের প্লাবন। এই হাঁটু ছাপিয়ে জল উঠল শহরবাসীর। তাতে কি? মেঘ রোদ্দুর তো জমিয়ে প্রেম করল। প্রচণ্ড প্লাবনে ভাসল শহর।
নদী সমুদ্রের প্রেম। নদী কি অনাবিল আনন্দে মিশে যায় সমুদ্রে। আচ্ছা নদীর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হয় না? আমাদের যেমন হয় মানে পোস্ট মডার্ন মহিলাদের? না বোধহয়। তাহলে এত সহজে মিশতে পারত না সমুদ্রে।
মুশকিল হল আমরা না পারলাম ঝড়ের দাপটে নুয়ে পরতে,না পারলাম সমুদ্রে মিশতে। নিজেদের ভালবাসি যে। ওই যে ভার্জিনিয়া মেমসাহেব বলে গেছেন নিজের চিলেকোঠার ঘরটি। ওই জায়গাটি আমাদের চাইই চাই।আমাদের চিলেকোঠার ঘরই সবচেয়ে ভালো। সেখানে পুতুলের বাক্স আছে, সেলাইএর বাক্সে রেশমি সুতো আছে, আছে লেখার খাতা, হিজিবিজি আঁকার খাতা।লেস বোনার আনন্দ আছে দু এক কাঁটা। গলা ছেড়ে গান গাওয়ার আনন্দ আছে। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে সৃষ্টির আনন্দে উদ্দাম নৃত্য আছে উরসুলা মেমসাহেবের মত।
আমাদের প্রেম নিজের সাথে নিজের। চিলেকোঠায় একলা দুপুরে উদ্দাম নৃত্য করতে করতে আমরা কবে যেন পাথুরে পাহাড় হয়ে গেছি। আকাশচুম্বী শুভ্র মুকুটধারী হিমালয় না হলেও, ছোট পাথুরে টিলা তো বটেই। নদীর উৎস নাই বা থাকল চোরা ঝর্না তো আছে।
আর আছে ঝিঁঝিট- এক পাহাড়ি কান্নার ধুন। সেও এক প্রেম।
ইন্দ্রাণী ঘোষ ।