কবিতায় সুমিত মোদক (গুচ্ছ কবিতা)

১| দক্ষিণের আকাশে
গভীর কালো মেঘ ঘিরে ধরলে অন্ধকার নামে উঠানে ;
শ্মশানের চিতা কাঠে দাউদাউ আগুন…
বিয়ে দিতে না পারা মেয়েটি তাকিয়ে থাকে
উঠানের বাইরে পাতা ঝরা মৃত প্রায় গাছটার দিকে ;
এমন সময় তার ডালে এসে বসে দুটি চাতক পাখি ;
যারা অপেক্ষা করছে বৃষ্টির জলের…
এর আগে যারা ঝড়ের সাক্ষী হয়ে ছিল
তারা এখন ডানা মেলে বাসার দিকে ;
প্রতি মুহুর্তে রঙ বদলে যাচ্ছে দক্ষিণের আকাশে ;
বাতাসে বাতাসে ভেসে বেড়ায় আদ্র ঘ্রাণ ;
মেয়েটি অনেক দিন আগেই ভুলে গেছে ভিজতে
বৃষ্টির জলে , অলীক আনন্দ উৎসবে ;
কেবল , একটু একটু করে ডুবে যায় নক্সী কাঁথায় ;
জন্ম দেয় নতুন এক সময়ের অজস্র রূপ রেখা ;
শ্মশান ভূমি জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মৌন কান্না
সাদা সাদা ছাই হয়ে মাটিকে ছুঁয়ে দিলে
অতীতের কথা গুলো মনে পড়ে যায় ;
যেখানে খেলা করে সেই মেয়েটি …
ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি নেচে উঠলো মাটির উঠানে ।
২| পরিস্থিতি
আকাশের বুকে কালো মেঘ জমলে
জলের নিচের মাছও বুঝতে পারে
এই বুঝি আকাশ ভেঙে পড়বে মাটিতে ;
সে বৃষ্টি হয়ে হোক বা বজ্রপাতে …
প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যাবে আবাদি জমি , বসতবাড়ি …
আর বজ্রপাতে দাউদাউ করে পুড়ে যাবে গাছ গুলো ;
তখন মানুষের কিছু আর করার থাকে না ;
চোখের সামনে সব ভেসে যায় , পুড়ে যায় …
জেগে থাকে কেবল কান্নার শব্দ , চোখের জল ;
জলজ মাছ ভাসতে ভাসতে ভেসে যায়
সীমারেখা অতিক্রম করে
নতুন আরেক পরিবেশে ;
দেখে নেই জীবন ও মৃত্যুর হাতছানি ;
অথচ , মানুষ চিনতে শিখলো না জীবনের
অস্পষ্ট শক্তি গুলো ;
সময় একটু একটু করে বদলে নিচ্ছে নিজেকে ;
বদলে নেয় পরিবেশ , পরিস্থিতি .…
ঠিক তখনই কেউ কেউ ধরে রাগ ভৈরব ;
ভোরের আলোয় স্নান সেরে নিয়ে শুরু করে চণ্ডীপাঠ ;
দিকে দিকে বেজে উঠে বোধনের শঙ্খ ।