অণুগল্পে ডরোথী দাশ বিশ্বাস

নদীর এপার কহে

জেলা শহরে মেয়েটি দিনরাত গলির মোড়ে। তার দুই দাদা পড়াশুনোতে খুব ভালো। দু’জনেই নিজের যোগ্যতায় খুব ভালো জব করে। বিয়ে হয়ে গেছে তাদের। একজন কোলকাতায়, একজন পুণেতে।

মেয়েটি স্কুলে পড়াকালীন প্রথমে পাড়ার একটি ছেলের সাথে ভালোবাসা, সেই ছেলেটিকে শহর ছাড়া করে ছাড়লো। তারপর কলেজ জীবনে অন্য একজনের সাথে দিনরাত গলির মোড়ে, তারপর বর্তমানে বি.এড করছে মেয়েটি, এখন আবার অন্য একজন। দিনরাত গলির মোড়েই। না, পড়শীদের সে তোয়াক্কা করেনা। স্কুটি নিয়ে এখন সে দূরদূরান্তেও চলে যায়। সে রাত এগারোটাতেও ফিরতে পারে। পাড়ায় বাস মালতীদেবীর। জানালা খুলতে বা বন্ধ করতে গিয়ে এ দৃশ্য তাঁরও চোখে পড়ে যায়। মালতীদেবীর এক ছেলে। উচ্চশিক্ষিত, লেখালেখির নেশা ছাড়া অন্য কোনো নেশা নেই। ছোটমোটো একটা জব সেও করে। একদিন মালতীদেবীর স্বামী এসে তাঁকে বলছেন— “দেখলাম মেয়েটি ভোরবেলা স্কুটি চালিয়ে আসছে, মাঝখানে লাগেজ, আর পিছনে তার বাবা। বোধ হয় ভদ্রলোক কোথাও গিয়েছিলেন। বাঁচতে হলে এভাবেই বাঁচতে হয়। মেয়েটি সকালে টিউশনি করে, দুপুরে বিএড কলেজ যায়। মাঝে সে আর কি করে আমার দেখার দরকার নেই।

মালতীদেবী একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলেন তাঁর স্বামীর দিকে। উনি বুঝতেই পারলেন না- স্বামী কি বলতে চান! তবে এটুকু বুঝলেন— নিজের ভদ্র শিক্ষিত শান্ত ছেলেটিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার এটাই একটা পন্থা।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *