ভাষান্তরে (অনুবাদ সাহিত্য) তপোব্রত মুখোপাধ্যায়

স্মরণিকা
(লিওপোল্ড সিডার সেঙ্ঘর)
আজ রবিবার।
আমি আমার ভায়েদের পাথুরে মুখের ভিড়-কে আজ ভয় পাই।
পূর্বপুরুষের যাতনাভরা আমার কাঁচের মিনার থেকে
আমি চেয়ে থাকি ঘন কুয়াশা-ছাওয়া ছাদ আর পাহাড়চূড়ার দিকে
নিস্তব্ধ— নগ্ন চিমনিগুলোর অনন্ত গাম্ভীর্যের দিকে।
তাদের পায়ের কাছে আমার স্বপ্নেরা শুয়ে, মৃত, আমার সমস্ত ধূলিধূসর স্বপ্নেরা
আমার সমস্ত স্বপ্ন, স্বাধীনতার লাল রক্ত ছেয়েছে রাস্তায় রাস্তায়
কসাইখানার রক্তধারার মধ্যে মিলিয়ে গেছে।
আর এখন, শহরতলির এই মিনার থেকে
আমি দেখছি আমার স্বপ্ন অবহেলায় ভেসে যাচ্ছে পথে পথে, পাহাড়ের পায়ের নীচে
আমার জাতির রক্ষকেরা যেমন গেছে গাম্বিয়ার তীরে বা সালোমে,
তেমনই এখন সেইনে, পাহাড়ের তলদেশে।
আমায় বিগত সেই প্রাণের কথা ভাবতে দাও!
গতকাল ছিল তুসঁ, গুরুগম্ভীর এক সূর্যপুজোর সমারোহ
যেদিন কোন কবরখানায় স্মৃতিচারণ নিষেধ।
আঃ, বিগত সব প্রাণ যারা কখনও মরতে চায়নি, যারা জানতো কীভাবে
মৃত্যুর বিপক্ষে লড়ে যেতে হয়
সাইনের তীরে বা সিনে-র তটে, আর আমার কম্পিত ক্ষীণ শিরা
সেই অদম্য রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে ক্রমে,
করো, রক্ষা করো আমার স্বপ্নকে যেমন কঠিন করে গড়েছ তোমার সন্তানদের,
সেই দুরন্ত সব ভ্রামকদের।
হে মৃত্যু, এই রবিবাসরীয় কুয়াশার নীচে প্যারি-শহরের ছাদ যত, রক্ষা করো
রক্ষা করো যারা সেই মৃতকদের পাহারায়
রক্ষা করো, যেন এই মিনারের ঠুনকো সুরক্ষা ছেড়ে আমি নামতে পারি রাস্তায়
আমার নীল-চোখের ভায়েদের সঙ্গে
কঠিন হাতে হাত মেলাতে।