অণুগল্পে রমেশ দে

অবসর

বয়সটা ষাট পেরিয়েছে। রমেনবাবু অফিসের খুব কর্ম নিষ্ঠ মানুষ ছিলেন।আজ দুবছর হলো বাড়িতে বসে আছেন। কাজের থেকে অবসর নেওয়ার পর কেমন যেন মনমরা অবস্থা। সময় কাটতে চায় না। যৌবনে হাজারো বন্ধু, বান্ধব। এখন তাদের কেউ আর নেই। কেউ বা ছেলের ‌সংসারের ঘূর্ণিপাকে পড়ে আর উঠতে পারছে না। আবার কেউ বা রোগগ্রস্ত হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী। বার্ধক্যে এসে সবাই কতো ক্লান্ত। আমার সেই বিচারক বন্ধু রনবীর সেও শুনেছি অবসর নিয়েছে। ছুটি পেলেই সবাই একসাথে বেরিয়ে পড়তাম। কত হৈ, হুল্লোড়, মজায় ভরপুর ছিল সেই দিন। যে বিচারক বন্ধু হাজার নিরপরাধ মানুষকে বাঁচিয়েছে।আজ রোগগ্রস্ত হয়ে সময়মতো জল পায় না। আজ সেই, বিচারের বানী যেন নীরবে, নিভৃতে কাঁদে। যখন শৈশব ছিল তখন কৈশোরের যুবক, যুবতীদের দেখে মনে হতো এরাই যেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী। আবার যখন কৈশোরে পা দিলাম তখন মনে হতো চাকরি পেয়ে যৌবনে অবতীর্ণ হয়ে বিবাহ করে সংসার করার নামই সুখ। কিন্তু এই সন্ধিক্ষণে এসে বুঝলাম এখনও প্রাপ্তি সম্পূর্ন হয়নি। এরপর যখন অফিসের অবসর প্রাপ্ত সাহেবদের দেখতাম। তখন মনে হতো এরাই হয়তো সুখী। কিন্তু এই মঞ্চে এসে দেখলাম শূন্যস্থান যেন জীবনের কোনো মঞ্চেই পূর্ন হয় না।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।