কবিতায় স্বর্ণযুগে প্রদীপ সরকার (গুচ্ছ)

১| বুকের মাঝে রোজই জমে
বোকা বোকা গল্প গুলো
পুড়িয়ে দেবো আজকে রাতে
লিখে ছিলাম সাধ আহ্লাদে
বুকের ভিতর মন খাতাতে।
গল্পগুলোর দোষ কি বলো
বোকা বটে গল্পকার
যে পিরীতে আলগা সোহাগ
শিকড় ছাড়ে সে কবে আর!
জলের বুকে দহন জাগলে
জল পুড়ে পুড়ে বাস্প হয়
ছল সোহাগে ছুঁয়ে দিলেই
মেঘ ওড়না উড়িয়ে দেয়।
আলিঙ্গনের পাহাড় পেলেই
বুকের ভিতর বৃষ্টি নামে
এমন সরল গল্পগুলো
বোকা মনে রোজই জমে।
২| এক অন্য ধর্ম জাগছে
কি শাড়ি, কি ধূতি বুনছো তাঁতি মশাই
ব-সানা কোন সূতোর টানা পোড়েন?
মাকু চলে ডাইনে ও বাঁয়ে খট খটা খট
বদলে যাচ্ছে বেবাক দৃশ্যপট
কে তলোয়ার আর কে যে ত্রিশূল ধরেন!
দেশটা নিয়ে মাতলামি টা ছাড়েন
ধর্ম নিয়ে ভোট বাজারে বুজরুকি র খেলা
ভালোয় ভালোয় এক্ষুণি বন্ধ করেন।
ধর্ম ছাড়া অন্য এক ধর্ম জাগছে হাজার বুকে
ঝাঁপিয়ে পড়লে সামলাতে পারবেন?
৩| তৃষ্ণা প্রহর প্রলম্বিত হয়
তুমি তীব্র পিপাসা বুকে নিয়ে
তৃষ্ণা প্রহর কাটাবে কতো আর!
কেউ মাটির কলসি তে ঝর্ণার জল এনেছিলো
তুমি নিস্পৃহ,সন্ধ্যার হাওয়ার মতো উদাসীন।
পাণ করেছো আকণ্ঠ সুস্বাদু পানীয়
বাহারি পানপাত্র ভ’রে বেলায় অবেলায়
তৃষ্ণা বেড়েছে চাতকী র চেয়ে বেশী
শুকিয়েছে বুক উন্মুখ প্রতিক্ষায়;
কালবেলার খুঁজে খুঁজে বেলা ব’য়ে যায়
বুক থেকে উঠে এসে শুষ্কতা জড়িয়েছে ঠোঁটে
তবু মাটির কলসি আর ঝর্ণার জল
আজও তোমার অপাঙ্কতেয় মনে হয়।
এতো তৃষ্ণা বুকে নিয়ে
দেশান্তর রেখা পেরিয়ে পেরিয়ে
বিষুব রেখার খুব কাছাকাছি
দাঁড়িয়ে রয়েছ যে দ্রাঘিমায়
সেখান থেকে ফিরবে কেমন করে
এই অবেলায়, কোন অছিলায়!
বাস্পায়নের পীড়া স’য়ে স’য়ে
কালবেলায় শূন্য হ’য়ে যায় কলসি
কারো দীর্ঘশ্বাস শুধু বেঁচে থাকে
ভালোবাসাহীন শুকনো হাওয়ায়।
৪| মুছে যাবে জানি
এ ভাবে উড়ে আসা ধূলো
অনায়াসে পারো ঝেরে ফেলে দিতে;
উপত্যকার শ্যামল প্রান্তর
ঢাকা যায় কোনো ধূসরতায়?
দুপায়ে দুর্বাদল দ’লে দ’লে
সবুজ মাঠের বুকে সর্পিল মেটে পথ
নিটোল ছবির মতো এঁকে দেওয়া যায়;
সে এক অস্থায়ী শৈল্পিক পথরেখা পট।
মৃত্যুহীন শিকড় অবিরত জাগিয়ে রেখে
ঘাসের প্রাণ দিন গোনে বর্ষার প্রতিক্ষায়।
তোমার বুকের পোড়া দাগ মুছে যাবে জানি
একদিন অনুশোচনার বর্ষায়।