T3 ক্যাফে কলমে – পূর্বা কুমার

“আন্দোলনরত শিক্ষককে পুলিশ লাথি মেরেছে”

এই ঘটনার বিরোধীতা করতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটা শ্রেণী পাল্টা বিবৃতি বা নিদান দিচ্ছেন যে কোনো শিক্ষক শিক্ষিকা যেন ওই পুলিশে কর্মীর সন্তানদের না পড়ান।

এটা আপনাদের কাছে কতোটা যুক্তি সঙ্গত?

 

আমি পেশায় শিক্ষক। দীর্ঘ কুড়ি বছর পড়াচ্ছি। আমার মনে হয়, যে পুলিশ লাথি মেরেছে তার ছেলেকে না পড়ানোর সিদ্ধান্ত গর্হিত অপরাধ। হ্যাঁ, আবার বলছি অপরাধ। একজন শিক্ষকের কাজ তো শুধু পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাস শেষ করা নয়, ছাত্র ছাত্রীর চেতনা তৈরি করার দায়িত্ব শিক্ষকের। শিক্ষককে মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়। সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছি ছোট ছেলেমেয়েরা বাবা মায়ের পরেই স্কুলের শিক্ষককে বিশ্বাস করে, ভালবাসে। কচি মনে আলগা একটা টোকা দিলেই মনের ঝাঁপি উজাড় করে দেয়। তাদের কষ্ট, দু:খ,আনন্দ…. সেই নরম হৃদয়ে মূল্যবোধ গড়ে তোলা একজন শিক্ষকের কাছে খুব একটা কঠিন কাজ নয়। পুলিশের ছেলেটি কী অপরাধ করেছে? সে একটা কুঁড়িমাত্র। তাকে ফুল হয়ে ফুটে উঠতে শিক্ষক কেন সাহায্য করবে না? বাবার দায় তার ছোট্ট কাঁধে আমরা চাপিয়ে দিতে পারি না। বরঞ্চ কুঁড়িটাকে অকালে পোকায় কাটা থেকে রক্ষা করতে হবে।
আর একটা কথা, পুলিশ বা শিক্ষক সবাই কিন্তু একটা সিস্টেমের অংশমাত্র। সিস্টেম পচে গেলে একজন পুলিশ বা শিক্ষককে দোষ দিয়ে কী লাভ?

 

পূর্বা কুমার।
সহশিক্ষিকা, কোমধাড়া মথুরকুড় হাইস্কুল,
বাবনান, হুগলি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।