সম্পাদকীয়

‘মুখবই’ -এর সমর্থনে কিছু কথা
আমার Social media -র সাথে পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে। অর্কুটের যুগে আমি ছিলাম না, আবার ইনস্টাগ্রাম, হোয়াট্সঅ্যাপ অনেক পরে এসেছে। ইউটিউব চলবে এমন মোবাইল ছিল না, আর কম্পিউটারও ছিল না আমার। তাই ইন্টারনেট বলতে সার্চ ইঞ্জিন গুগল আর Social media ফেসবুক। একটা সময় ছিল যখন ফেসবুক করাকে পাপের চোখে দেখা হত। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে। এখন তো ক্লাস ফাইভের বাচ্চারও ফেসবুক প্রোফাইল আছে, আমি ক্লাস টুয়েলভেও প্রোফাইল পিকচার রাখার সাহস করিনি, পাছে কেউ বলে দেয় বাবা-মাকে। তবে তখন ফেসবুকে লাইক করা, কিছু কমেন্ট আর বন্ধু বানানোতেই আনন্দ ছিল। স্কুলের বন্ধু ছাড়াও দেশ বিদেশের বন্ধুও হত। তবে আমি মনে করি আমি ভাগ্য করে কিছু ভালো বিদেশী বন্ধু পেয়েছি। ফেসবুকে বন্ধু বানানো একদম খারাপ নয়। আমারতো কাছের বন্ধুরা সব আনফ্রেন্ড হয়ে গেলো, বিদেশী বন্ধুরা কিন্তু রয়ে গেলো। ফেসবুক মানুষকে একা করে দিয়েছে? আমি মানি না। ফেসবুক আবর্জনাকে দূর করেছে। যারা বন্ধু হওয়ার যোগ্য নয়, যতই পাশের বাড়ি বা স্কুলের বন্ধু হোক, তাদের জন্য রয়েছে ব্লকলিস্ট। অনেক ফেসবুকের দূরের বন্ধু কিন্তু বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ, ইন্টারনেট বা ফেসবুক বিজ্ঞানেরই দান, আর বিজ্ঞানের সব দানেই কিছু ভালো আর কিছু খারাপ দিক আছে। দোষটা বিজ্ঞানের নয়, দোষটা ব্যবহারকারীর। এই যেমন সামান্য কাগজ, আর ফেসবুকের পূর্বসূরির কথাই ধরা যাক, পত্র। অনেক পত্র সাহিত্য হয়েছে, পত্রে অনেক জীবন বেঁচেছে আবার কিছু পত্র ছিল নিছকই বিনোদনমূলক। চিন্তা হ্রাস করেছে অনেক পত্র। তেমনই অনেক ডাকাত কিন্তু পত্রাঘাত করেই ডাকাতি করতো। একটা পত্রের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে কত পরিবার থেকে দেশ। নির্মম খবর বয়ে এনেছে সুইসাইড নোট। তাই তখনকার পত্র কিংবা হালের ফেসবুক ইন্টারনেট, যে চালাচ্ছে তার মানসিকতা ভালো হলে এ সবই আশীর্বাদ, নইলেই অভিশাপ। তাই আজ আমার একটাই আব্দার ফেসবুককে খারাপ বলা নয়, যাতে সবাই ফেসবুককে সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহার করে সেদিকেই সবাইকে নজর রাখতে হবে। ফেসবুকের যুগে ফেসবুক থেকে বিরত থাকলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই আমাদের উচিৎ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা। আর এমনটা হচ্ছে বলেই আমার বন্ধু লিস্টের সবাই কোন না কোন সৃষ্টির কাজে জড়িয়ে আছে। তাই গর্বিত হোন একজন সৎ ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে।
সায়ন্তন ধর