T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় মৃদুল শ্রীমানী

ঘুড়ির কথা
জাপানের লোকেরা খুব ঘুড়ি ওড়ায়। সেদেশের শিগা প্রদেশের হিগাশিওমি শহরের ইওকাইচি এলাকায় বিশালাকার ঘুড়ি ওড়ানো হয়। সেদেশের নববর্ষের সময়ে ছুটির দিনে শিশুরা ঘুড়ি ওড়াবে আর মে মাসে বালকেরা ঘুড়ি ওড়াবে, এ একেবারে ঐতিহ্যের মতো ব্যাপার। কোথাও কোথাও রীতি আছে যে, ছেলে জন্মালে নতুন ঘুড়ি ওড়াতে হবে। সারা জাপান জুড়ে অনেক ঘুড়ি উৎসব হয়। তারমধ্যে ওই ইওকাইচির উৎসবটি খুব নাম করা। তার সূচনা হয়েছিল ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে। সে দেশে উৎসবে সবচাইতে বড় যে ঘুড়িটা কখনো বানানো হয়েছিল, তা চওড়ায় ছিল বাষট্টি ফুট, আর উচ্চতায় ছিল সাতষট্টি ফুট। ওজনও ছিল বিরাট, দেড় হাজার কিলোগ্রাম।
জাপানের হনসু দ্বীপের শিজুওকা প্রদেশের পশ্চিমভাগে হামামাৎসু নামে এক শহর আছে। তারই দক্ষিণ দিকে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে নাকাতাজিমা নামে বিরাট এক বালিয়াড়ি। সেই বালিয়াড়িতে প্রতি বছর মে মাসের তিন থেকে পাঁচ তারিখ অবধি বিরাট ঘুড়ি উৎসব হয়। এই উৎসবে ভীড় হয় প্রচুর। কুড়ি লক্ষ মানুষ দর্শনার্থী হয়ে ছুটে আসে ঘুড়ি উৎসব দেখবে বলে। কথিত আছে, হিকুমা দুর্গের শাসক তাঁর প্রথম পুত্র সন্তান হলে তা স্মরণীয় করে রাখতে ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন। তবে এ নেহাতই কথার কথা। সমুদ্রের ধারে বিস্তীর্ণ বালিয়াড়িতে জোরদার এলোমেলো হাওয়া বয়, আর আবহাওয়াটাও থাকে ঘুড়ি ওড়ানোর অনুকূল। মানুষ হইহই ছাড়বে কেন! হামামাৎসুর এই উৎসবে ঘুড়ির লড়াই হয়। তার নাম হল তাকো। ঘুড়ির আরেক ধরনের খেলা হল ইয়াতাই। চমৎকার করে সাজানো ঘুড়ি আকাশে যেন ফ্যাশন প্যারেড করে। তার সাথে বাচ্চাদের ঝলমলে পোশাক আর বাঁশি বাজানো আর ব্যাণ্ড বাজানো অনুষ্ঠানকে চমৎকার চেহারা দেয়।
অনুষ্ঠানের আরেকটি অংশ হল নেরি। এটা হল পতাকা সামনে রেখে পিছে পিছে লণ্ঠন নিয়ে শোভাযাত্রা। তূরী, ভেরী, কাড়া নাকাড়া বেজে ওঠে, আর মানুষ মেতে ওঠে নাচে। এই নাচটাকে বলে গেকিনেরি। শোভাযাত্রার মধ্য থেকে জনতা মাঝে মাঝে সমস্বরে চেঁচিয়ে ওঠে ওইশো, ওইশো!
আর এক ঘুড়ি পাগল দেশ হল চীন। অতি প্রাচীন কাল থেকে সেদেশে ঘুড়িচর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে পরিগণিত। সেদেশের শানডং প্রদেশের ওয়েইফ্যাং শহরে ঘুড়ি ওড়ানো বহুদিনের ঐতিহ্য। প্রতি বছর এপ্রিল মাসে কুড়ি থেকে পঁচিশ তারিখ অবধি ওয়েইফ্যাং শহরে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব পালন হয়। ওয়েইফ্যাং শহরটা শুধু চীন দেশের ঘুড়ি সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে পরিচিতই নয়, সারা পৃথিবীর ঘুড়ি রাজধানীর মর্যাদা দাবি করে। ১৯৮৪ সালে এখানে এই আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের সূচনা হয়।
আমেরিকার ওয়াশিংটন প্রদেশের প্রধান শহর সিয়াটল এর ঘুড়ি সংস্থার চেয়ারম্যান ডেভিড চেকলে (১৯১৭ -১৯৮৮) র সহযোগিতা ও সমর্থনে ওয়েইফ্যাং এ এই আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের সূচনা হয়। ১৯৮৯ এ ষষ্ঠ ঘুড়ি উৎসবে এখানে চীন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইউনাইটেড কিংডম, ইতালি এবং আরো বারোটি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি ফেডারেশন গড়ে ওঠে। আর তার প্রধান কর্মকেন্দ্র হয় ওয়েইফ্যাং শহর। এখানে একটি বিশালায়তন ঘুড়ি মিউজিয়াম রয়েছে, এবং প্রায় দু হাজার ঘুড়ি এই মিউজিয়ামে প্রদর্শিত আছে।
চীন দেশের এই ঘুড়ি ওড়ানোর ঐতিহ্য প্রায় দুহাজার বছরের পুরোনো। হান শিন নামে এক সমরনায়ক ছিলেন, যিনি নাকি স্রেফ ঘুড়ি উড়িয়ে শত্রু পক্ষের দুর্গে প্রাচীর পেরিয়ে ঢুকতে হলে কতটা সুড়ঙ্গ খুঁড়তে হবে, তা বুঝে ফেলতেন। তারপর শুরু করতেন আক্রমণ।
ঘুড়ি ওড়াতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কিছু কম যায় না। এখানে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহান্তে ঘুড়ি উৎসব হয়। ওয়াশিংটনের লং বিচে এই ঘুড়ি উৎসবে লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে এই লং বিচে হাওয়া এমনি জোরদার যে, বড় ঘুড়ি মানুষকে একশ ফুট উঁচুতে তুলে রাখতে পারে। ঘুড়ির লড়াই এবং লণ্ঠন ঘুড়ি ওড়ানোয় মেতে ওঠে লং বিচ। এই লং বিচ আঠাশ মাইল লম্বা। বিচের নিজস্ব লোকসংখ্যা খুব কম, হাজার দেড়েকের বেশি নয়। তার মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগের বেশি লোক শ্বেতাঙ্গ। এখানে ওয়ার্ল্ড কাইট মিউজিয়াম এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে।
ভারতেও ঘুড়ি ওড়ানো যথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে শোনা যায় খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর চৈনিক পরিব্রাজক ফা হিয়েন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের খোঁজ করতে ভারতে এসেছিলেন, আর সঙ্গে এনেছিলেন ঘুড়ি। ওই ঘুড়ি উড়িয়ে ফা হিয়েন ভারতীয়দের সঙ্গে মিত্রতাস্থাপন করেছিলেন। এই একই বিষয়ে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আসা চৈনিক পর্যটক হিউয়েন সাং এর নামও জড়িয়ে আছে। তিনি ভারতে দীর্ঘ সতের বৎসর পরিব্রাজন করে তাঁর অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তাঁরও জনসংযোগের মাধ্যম ছিল ঘুড়ি।
প্রতি বৎসর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে ১৪ জানুয়ারি থেকে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব হয়। অনুষ্ঠান চলে সাতদিন ধরে। ২০২২ খ্রিস্টাব্দে ৩১টি দেশ থেকে নানা বয়সী মানুষ বিভিন্ন নকশার ১৮০টি ঘুড়ি নিয়ে এই উৎসবে যোগদান করেছিলেন। ১৯৮৯ থেকে প্রতি বৎসর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে ১৪ জানুয়ারি এই অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। গুজরাট এবং সন্নিহিত এলাকায় এই অনুষ্ঠান উত্তরায়ণ নামে পরিচিত। চীন, জাপান, ইতালি, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিযোগীরা এখানে এসে ঘুড়ি উড়িয়েছেন। বাংলাদেশে, বিশেষ করে পুরনো ঢাকায় পৌষ মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ পৌষ বা মকরসংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো উৎসব পালন করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিশ্বকর্মা পূজার দিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা রয়েছে। তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল উৎসবে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা রয়েছে। হায়দরাবাদেও মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো হয়।
সারা পৃথিবীতেই নানা সংস্কৃতিতে ঘুড়ি উল্লেখযোগ্য জায়গা নিয়েছে। ইউরোপে ঘুড়ির ধারণা বহে নিয়ে গিয়েছিলেন ভূপর্যটক মার্কো পোলো। সেটা ত্রয়োদশ শতাব্দী। আধুনিক কালে ঘুড়ি উড়িয়ে বিশ্বখ্যাত হয়েছিলেন আমেরিকান মনীষী ও রাজনীতিবিদ বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (১৭ জানুয়ারি ১৭০৬ – ১৭ এপ্রিল ১৭৯০)। তিনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র গড়ে তোলার অন্যতম স্থপতি ছিলেন। আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার খসড়া দলিল তৈরির দায়িত্ব তাঁর কাঁধে ছিল। তিনি ছিলেন এই দলিলের অন্যতম স্বাক্ষরকারী। এছাড়া তিনি ছিলেন আমেরিকার প্রথম পোস্টমাস্টার জেনারেল। ঘুড়ি উড়িয়ে সেই ঘুড়ির মাধ্যমে আকাশের বিদ্যুৎকে ধরে আনার একটা গল্প তাঁর নামে চালু আছে। ফ্রাঙ্কলিন বলেছিলেন, ঝড়ের মধ্যে ঘুড়ি উড়িয়ে বিদ্যুৎচমককে পাকড়াও করে মাটিতে নামিয়ে আনা যায়। সেই শুনে ফরাসি পদার্থবিদ টমাস ফ্রানকয়েস ডালিবার্ড (১৭০৯ – ১৭৭৮) ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে উত্তর ফ্রান্সের মেরি লা ভিল এলাকায় একটি পরীক্ষা করেন। ফ্রাঙ্কলিনের নামে ঝড়ের আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর গল্পটা চালিয়ে দিয়েছিলেন ইংরেজ রসায়নবিদ জোসেফ প্রিস্টলি (১৭৩৩ – ১৮০৪)। তিনি বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছিলেন। কিন্তু ১৭৫২-র ১৯ অক্টোবর পেনসিলভ্যানিয়া গেজেটে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে বলা হয় নি যে, ফ্রাঙ্কলিন স্বয়ং এই পরীক্ষাটি করেছিলেন।
ওই যে পাতলা কাগজে দুটি কাঠি কেমন ভাবে জুড়লে সুতোর টানে ঘুড়ি হয়ে উড়তে পারে, আকাশে নানারকম চক্কর কাটতে পারে, আর শুধু তাই নয়, ঘুড়ির লড়াই লড়তে পারে, এই জিনিসটা মানুষের কৌতূহলকে বিকশিত করেছে। কত রকম চেহারায় যে মানুষ ঘুড়ি উড়িয়েছে, সাপ, মাছ, ড্রাগন, অক্টোপাস, তার আর ইয়ত্তা নেই। হাওয়া কখন কিভাবে বহে যায়, তা নিয়েও খোঁজ খবরের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ওই যে মাটিতে পা রেখে দাঁড়িয়ে, নিজের তৈরি ঘুড়িকে মানুষ আকাশে তুলল, তাকে নিজের খুশি মতো নানাভাবে চালনা করে তার নানাবিধ জিজ্ঞাসা গড়ে উঠল। ওই জিজ্ঞাসা জিনিসটাই চিন্তাশীল মানুষের মনের পুষ্টি যোগায়, গভীরতর অনুসন্ধানে লিপ্ত করে।
বিমান আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও ঘুড়ির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইট, দুজনের কেউই হাইস্কুলের গণ্ডি ঠিকমতো না পেরোলেও এরোপ্লেন আবিষ্কার করেছিলেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে আমেরিকার আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে নর্থ ক্যারোলাইনা প্রদেশের ডেয়ার কাউন্টির একটি ছোট্ট শহর কিটি হক এ উইলবার আর অরভিল, এই দুই ভাই মিলে প্রথম বিমান উড়িয়ে ছিলেন। তবে রাইট ভাইদের থেকে আগে জার্মান আবিষ্কারক ও ইঞ্জিনিয়ার অটো লিলিয়েনথাল ( ২৩ মে ১৮৪৮ – ১০ আগস্ট ১৮৯৬) গ্লাইডারে চড়ে বহুবিধ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তা গবেষণা আকারে নথিবদ্ধ করে গিয়েছেন এবং এই কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। রাইট ভাইয়েরা লিলিয়েনথাল সাহেবের গবেষণা কাজে লাগিয়েছেন এবং বলেছিলেন, তাঁর গবেষণা তাঁদের প্রচুর উৎসাহ যুগিয়েছে।
ঘুড়ির ব্যাপারে আর একজন বিশ্ববন্দিত মনীষার কথা না বললেই নয়। তিনি ইতালীয় রেনেসাঁ পুরুষ লিওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৫ এপ্রিল ১৪৫২ – ২ মে ১৫১৯)। জ্ঞান বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যার বহু শাখায় তাঁর অনায়াস সঞ্চরণের পাশাপাশি তিনি একজন প্রতিভাশালী ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি পাখির ওড়া নিয়ে বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা ও চর্চা করেছিলেন। ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে ‘কোডেক্স অন দি ফ্লাইট অফ বার্ডস’ পুঁথিতে তিনি সেই সব চর্চার নিদর্শন রেখে গিয়েছেন। সেই পুঁথি এখন উত্তর ইতালির তুরিন শহরের রয়্যাল লাইব্রেরিতে রয়েছে। তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন, একটি উড়ন্ত পাখির শরীরের ভরকেন্দ্র আর উড়াল তৈরির চাপকেন্দ্র ভিন্ন ভিন্ন বিন্দুতে থাকে। গবেষকরা বলেছেন, তাঁর ধারণা নিয়েই প্যারাশ্যুট গড়ে উঠেছে। তিনি জানতেন, মানুষের হাত এতটা মজবুত নয় যে, তাতে ডানা লাগিয়ে নিলেই তা নেড়েচেড়ে মানুষ উড়তে পারবে। তাই স্রেফ ডানার সাহায্যে মানুষ উড়বে, এই ভাবনাকে আমল না দিয়ে তিনি কতকগুলি হাতল, পাদানি, আর বেশ কতকগুলি কপিকলের সাহায্যে পাতলা পর্দা দিয়ে তৈরি ডানাওয়ালা যন্ত্রের কথা ভেবেছিলেন। লোকে এই গোছের যন্ত্রকে অর্নিথপটার বলে চেনে। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি অর্নিথপটারের আঁকিবুঁকি ও পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তেমন যন্ত্র বাস্তবে বানিয়ে উঠতে পারেন নি, শুধু ডিজাইন হয়েই থেকে গিয়েছিল। কেননা, মানুষকে নিয়ে ওড়ার যন্ত্র তৈরি করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্যান্য যে উন্নতি হওয়া দরকার ছিল, তা তখনো অবধি হয়ে ওঠে নি। আজ যখন বিভিন্ন মহাকাশযান, উপগ্রহ এবং ড্রোন জাতীয় যন্ত্র নানাবিধ সার্ভের কাজ করে, তখন ভিঞ্চির অবদান মনে পড়ে। আর ঘুড়ি যেন তার শৈশবের খেলনা।