মুক্ত গদ্যে সন্দীপ সাহু

শূন্য ভেল মন্দির
বর্ষাকাল নাকি গরম! কত দিন বৃষ্টি নেই। যদিও শ্রাবণ মাস, কিন্তু ক্ষমতায় জ্যৈষ্ঠ! গায়ের জোরে ও পাকস্থলির জোরে এখনো ক্ষমতায় রয়ে গেছে। শ্রাবণ বেচারা জিতেও জয়ের সংশাপত্র পায়নি। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ঘোরাঘুরি করছে।
আজ শ্রাবণ সংশাপত্র পেল। প্রকৃতি দিতে বাধ্য হলো। ভোর রাতেই। এখনো গতিতে গীত করছে। মধ্যরাতে প্রকৃতির ডাকে চান ঘরে গিয়ে ছিলাম। শ্রাবণ যে সেই মাত্র জয়ী ঘোষিত হয়েছে, বুঝতে পেরে ছিলাম। এই মিনিট দশেক হলো চার পাতা ঐক্য ভেঙেছে। শ্রাবণ-গীতির নিরবিচ্ছিন্নতাকে অনুভব করে একটা যেন গ্রীষ্ম-বিদ্বেষী মনটা আনন্দই পেল। শ্লা গরম হারছস তাঅলে! গরমের গর্মীটা একেবারে অগণতআন্ত্রিক ফ্যাসিস্ট ছিল!
এই গরম কী নাই না করেছে! পুকুর রাস্তা মাটি বালি পাথর কয়লা সোনা গরু চাকরি কী না কি চুরি করেনি! তবুও কিছু ডোবা পড়ে রয়েছে এদিকে ওদিকে। নব শ্রাবণের স্পর্শে প্রেমিকা ভেককূল তারস্বরে ডেকে চলেছে প্রেমিকদের! গরম মধুচক্রও এতদিন চালিয়ে এসেছে! মেয়েরাও চুরি হচ্ছিল! আজ শ্রাবণের ধারায় প্রেম-পুজো! স্বস্তি।
চণ্ডীদাস যেন আমার হয়ে গেয়ে উঠছেন—
“এ ভরা বাদর মাহ ভাদর।/ শূন্য মন্দির মোর।।” ভাদরের জায়গায় আমি গাইলাম শ্রাবর। নইলে ছন্দ মেলে না। ঝম্ ঝম্ বৃষ্টি। গেয়ে নেচে চলেছে প্রেমের গুষ্টি! আমি একা শূন্য ঘরে! বিরহ, সমস্ত যন্ত্রণা নিয়ে হাজির হয়েছে।
বৃষ্টি এতদিন ছিল। কাল চলে গিয়েছে শ্রবণের সঙ্গে! লিখে গেছে এতদিনে সে প্রেম পেয়েছে। এখন জীবন তার সিক্ত মরু। অচিরেই সমভূমি হবে। বীজ ধারণ করে শস্যশ্যামলা হয়ে উঠবে। পূর্ণ হয়ে উঠবে তার মন-মন্দির। “শূন্য ভেল মন্দির” আমার মনে!