ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ১১৩

ফেরা
সূর্য ডোবার পর। তাঁবুতে আবছা অন্ধকার। বাইরে থেকে হাওয়া এসে হু হু করে ধাক্কা মারছে। এমন সময় দরজা থেলে ঢুকলো ওখানকার কুক। হাতে গরম চা।
কোনোমতে উঠে বসে চা খাই। বলতে নেই একটু শরীর সারে। কিন্তু বাইরে বেরোনোর মতো হাল হয় না।
কুক জানান আলুসেদ্ধ হতে সময় লাগবে। উনি আলুভাজা করে দিলে হবে? তাহলে আমরা আর আধা ঘন্টার মধ্যে খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারবো। ঠিক আছে, ভাত ডাল আলু ভাজা সই। কিছু খেতেই হবে। কারণ খালি পেটে ওষুধ খাওয়া যাবে না। ওনার কথামতো উঠি। কোনোমতে টলতে টলতে বাইরে বার হই।
রাত তখন নামছে সারচু উপত্যকা জুড়ে। কালো আকাশের প্রেক্ষাপটে ফুটে উঠছে একের পর এক তারার দল। পলিউশন না থাকার দরুণ, ঝকঝক করছে। শরীর খারাপ ভুলে তাকিয়ে থাকি কিছুক্ষণ। তারপর আস্তে আস্তে ডাইনিং তাঁবুতে ঢুকি।
সেখানে তখন বাওয়াল চলছে। শতাব্দী ভার্সাস কুক। শতাব্দী বলছে প্লেন আলু ভাজা, কুক আবার সস টস দিয়ে তার একটা কারি মতন বানাতে চাইছে। তার এক কথা- মেহমান লোগ, ক্যায়সে ইয়ে সাধারণ খানা চলেগা। অনেক বোঝানোর পর সস দেয় বটে, তবে শুকনো করেই বানায়।
কোনোমতে একটু খেয়ে বাইরে আসি। আমিই শেষে বেরিয়ে ছিলাম। নিজেদের তাঁবুতে ঢুকলে শতাব্দী অনুরোধ করে, ওর লেন্স ক্যাপ ফেলে এসেছে ডাইনিং তাঁবুতে, আমি যেন সেটি নিয়ে আসি।
এতো রাগ হয়। কিন্তু কি আর করা যাবে। আস্তে আস্তে গিয়ে নিয়ে আসি। ঐটুকু যাওয়া, পঞ্চাশ গজ ও নয়, মনে হয় যেন দু মাইল দৌড়ে এলাম।
ঘড়ি দেখি। রাত নটা। এবার এক দীর্ঘ রাতের প্রতিক্ষা। কখন ভোর হবে আর আমরা সারচু ছাড়বো।