সম্পাদকীয়

” দু’চোখে হঠাৎ করে কালবৈশাখী
চৈত্রের শেষ বেলা পাতা ওড়ে নাকি।
গত বছরের মায়া ভেঙে যাবে বলে
রাজপথ ভেসে গেছে অচেনা কাজলে।”
বৈশাখ মানেই কাঠফাটা রোদ্দুর। চাতকের আকুতি। নানান উৎসব আর সঙ্গে কালবৈশাখী। ঝড় উঠলেই মনের কোণে একটা ছবি ফুটে ওঠে- অপু-দুর্গার আম কুড়ানো।
কত সিনেমাতেই তো দেখেছি কিন্তু পথের পাঁচালীর পরিচালক বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় মনের মধ্যে যে বীজটা পুঁতে দিয়ে গেছে সেই মোহের ছায়া ছেড়ে আর কোন ছায়াতেই মন ভরে না। শহুরে কালবৈশাখীটা একটু অন্যরকম। এখানে শুধুই পাতা ওড়ে। ঝরে যায় মন খারাপের কৃষ্ণচূড়া। পিচ গলা রাস্তায় অজস্র স্মৃতি নিয়ে চলে যায় ঐতিহ্যবাহী ট্রাম । আকাশময় উড়তে থাকে শিমুল তুলো।প্রেমিক চায় দু’ফোটা বৃষ্টি। ঢলে পড়া আলোতে হলুদ পাখিটা ডেকে চলে – পিউ-কাহাঁ।
এইসবের মধ্যে শুরু হয় উৎসব। অক্ষয় তৃতীয়া দিনটিকে স্বতঃসিদ্ধ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। এই দিনটি হিন্দু ও জৈন ধর্মের একটি বিশেষ দিন বলে মনে করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ায় ত্রেতা যুগে শুরু হয়। অক্ষয় তৃতীয়ায় দশমহাবিদ্যায় বিষ্ণু অবতার ভগবান পরশুরাম এবং নবম দেবী ভগবতী রাজ-রাজেশ্বরী মাতঙ্গীর জন্মবার্ষিকী পালিত হয়।
এই শুভদিনে বেদব্যাস ও গণেশ মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এই দিনে রাজা ভগিরথ গঙ্গা দেবীকে মর্তে নিয়ে এসেছিলেন। এই দিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। কুবেরের লক্ষী লাভ হয়েছিল। ফলে এদিন বৈভব লক্ষ্মীর পুজো হয়।
এই দিনে কেনা জিনিস দীর্ঘ সময়ের জন্য সমৃদ্ধি দেয়। গৃহ ও পরিবারে সমৃদ্ধি আসে। লক্ষীনারায়ণের পূজা হয়। এছাড়াও ব্রহ্ম মুহূর্তে পবিত্র নদীতে স্নান করলে পুণ্য হয়। শুভ অক্ষয় তৃতীয়া। সবাই খুব ভালো থাকবেন।