|| রাশিয়ান রসায়নবিদ দিমিত্রি ইভানোভিচ মেণ্ডেলিভ || লিখেছেন মৃদুল শ্রীমানী

রাশিয়ান রসায়নবিদ দিমিত্রি ইভানোভিচ মেণ্ডেলিভ আর ত়াঁর পর্যাবৃত্ত নিয়ম

এক যে ছিলেন রাশিয়ান রসায়নবিদ ও আবিষ্কারক দিমিত্রি ইভানোভিচ মেণ্ডেলিভ ( ৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৪ – ২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৭)। তিনি ১৮৬৯ সালের ছয় মার্চ রাশিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটির সভায় নিজের গবেষণা সন্দর্ভ পেশ করলেন। সন্দর্ভের নাম দি ডিপেনডেন্স বিটুইন দি প্রপার্টিজ অফ দি অ্যাটমিক ওয়েটস অফ দি এলিমেন্টস। এই সন্দর্ভে তিনি অ্যাটমিক ওয়েট এবং ভ‍্যালেন্স এর নিরিখে মৌলিক পদার্থগুলিকে চেনার কথা বললেন।
অ্যাটমিক ওয়েট বা পারমাণবিক ভার কে এখন আমরা আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর হিসেবে চিনছি।
এখন আমরা জানি হাইড্রোজেনের নির্দিষ্ট একটি আইসোটোপ ছাড়া অন‍্য সমস্ত পরমাণুর কেন্দ্রকে প্রোটন আর নিউট্রন একসঙ্গে থাকে। তো কারবন ১২ আইসোটোপের ভরের বারো ভাগের একভাগকে ভরের একটি একক ধরা হয়। এই এককটির নাম ডালটন বা ডিএ। এই এক ডালটনের তুলনায় একটি পরমাণু কতটুকু ভারি তা বিবেচনা করে এখন পারমাণবিক ভার নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে মেণ্ডেলিভের এই গবেষণা সন্দর্ভ পাঠের কালে পরমাণুর কেন্দ্রকের ধারণা আসেনি। কেন্দ্রককে ঘিরে ঘুরে চলা ইলেকট্রনের ধারণাও আসে নি। আইসোটোপের ধারণাও সুদূরপরাহত। ওই সময় মৌলিক পদার্থের অনেকগুলিই আবিষ্কার করা হয়ে ওঠেনি। হাইড্রোজেন আবিষ্কার করেছেন হেনরি ক‍্যাভেন্ডিশ, ১৭৬৬ সালে। হাইড্রোজেন নামটা দিয়েছেন আঁতোয়া ল‍্যাভয়সিয়ে, ১৭৮৩ সালে।
১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে জোসেফ প্রিস্টলে অক্সিজেন আবিষ্কার করেছেন। প্রায় একই সময়ে কার্ল উইলহেলম শীলে আলাদা ভাবে অক্সিজেন আবিষ্কার করেছেন। শীলে আরো আবিষ্কার করেছেন বেরিয়াম (১৭৭২), ম‍্যাঙ্গানিজ (১৭৭৪), মলিবডেনাম (১৭৭৮) ও টাংস্টেন (১৭৮১)। অক্সিজেন নামকরণ করেছিলেন আঁতোয়া ল‍্যাভয়সিয়ে। তিনি ১৭৭৫ থেকে ১৭৭৮ এর মধ‍্যে নানাভাবে পরীক্ষা করে অক্সিজেন যে মৌলিক পদার্থ তা নিশ্চিত হয়েছিলেন। মৌলিক পদার্থের চিহ্নিতকরণে আঁতোয়া ল‍্যাভয়সিয়ে (২৬ আগস্ট ১৭৪৩ – ৮ মে ১৭৯৪) খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর লেখা এলিমেন্টস অফ কেমিস্ট্রি বইতে আধুনিক পদ্ধতি মেনে রাসায়নিক মৌলিক পদার্থের তালিকা পেশ করেন। ল‍্যাভয়সিয়ে’র এলিমেন্টস বইতে তেত্রিশ টি মৌলিক পদার্থের নাম ছিল। তিনি অবশ‍্য আলো কেও মৌলিক পদার্থ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। আর ক‍্যালরিক নামেও একটা ধারণা সেকালে ছিল। তাও তিনি মৌলিক পদার্থের তালিকায় রেখেছিলেন। জন জ‍্যাকব বার্জেলিয়াস ( ২০ আগস্ট ১৭৭৯ – ৭ আগস্ট ১৮৪৮) পারমাণবিক ভার হিসাব করে মৌলিক পদার্থ চিনতে চেষ্টা করলেন। তাঁর সময়ে মৌলিক পদার্থ বলে চেনানো হত যেগুলিকে, সেগুলি সংখ‍্যায় ছিল ঊনপঞ্চাশটি। তার মধ‍্যে বার্জেলিয়াস পঁয়তাল্লিশটির পারমাণবিক ভার গণনা করেছিলেন।
উল্লেখ করা দরকার যে, সোনা, রূপা, তামা, লোহা, সীসা, পারদ, টিন, দস্তা আর কারবনের মতো পদার্থের বিষয়ে মানুষ বহুদিন থেকেই জানত।
১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে হামফ্রে ডেভি পটাশিয়াম আবিষ্কার করেন। ১৮০৮ এ জোসেফ লুইস বোরন আবিষ্কার করেন। সিলিকন আবিষ্কার করেছেন জনস জ‍্যাকব বার্জেলিয়াস, ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে। আর অ্যালুমিনিয়ম আবিষ্কার করেছেন হান্স ক্রিশ্চিয়ান ওরস্টেড। সময়টা ১৮২৫।
মৌল পদার্থের আবিষ্কার যেমন চলছিল, তাকে শ্রেণিবিন‍্যস্ত করার আগ্রহও বিজ্ঞানীদের মধ‍্যে ছিল। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে জার্মান পদার্থবিদ যোহান উলফগ‍্যাং ডোবারেইনার এমন একটা কাজে হাত দেন। ১৮২৯ নাগাদ তিনি দেখতে পান যে, তিনটি তিনটি করে মৌল নিয়ে এক একটা দল তৈরি করলে তাদের মধ্যে বেশ একটা গুণাবলীর মিল লক্ষ করা যায়। ১৮৬৩র ফেব্রুয়ারিতে জন নিউল‍্যাণ্ডস আটটি করে মৌল নিয়ে অমন দলের কথা ভাবলেন‌ কিন্তু তা সব ক্ষেত্রে খাটল না বিজ্ঞান বিষয়ক কাজে এই ব‍্যাপারে খুব কড়াকড়ি। এখানে খাটবে, ওখানে খাটবে না, বিজ্ঞানীরা সাধারণভাবে এমন আধখ‍্যাঁচড়া তত্ত্বকে বিজ্ঞান আখ‍্যা দিতে চান না। ১৮৬৪ তে লোথার মেয়ার আঠাশটি মৌল নিয়ে একটি পর্যায় সারণি গড়েছিলেন। ১৮৬৯ সালে তৈরি হল মেণ্ডেলিভের পর্যায় সারণি। তা দুনিয়াকে চমকে দিল। অ্যাটমিক ভার লক্ষ করে তিনি মৌলগুলির সারণি বানালেন। সেই সারণি বহুরকমভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হল।
দিমিত্রি ইভানোভিচ মেণ্ডেলিভ সেন্ট পিটার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিষয় নিয়ে এমএসসি পড়েছিলেন। ১৮৫৬ সালে বাইশ বছর বয়সে তিনি এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৮৬০ সালে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।
ওই সময় সিজিয়াম নামে মৌলিক পদার্থের আবিষ্কার নিয়ে ব‍্যস্ত ছিলেন রবার্ট বুনসেন আর গুস্তাভ রবার্ট কির্চহফ। স্পেকট্রোস্কপি অর্থাৎ আলোর বর্ণালি লক্ষ করে মৌল খোঁজার কাজে ব‍্যাপৃত ছিলেন তাঁরা। ওঁদের কাছে বিভিন্ন পাঠ নিলেন মেণ্ডেলিভ। নিজেকে সমৃদ্ধ করলেন।
১৮৬১ সালে সেন্ট পিটার্সবুর্গ এ ফিরে এসে সেখানে টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এ পাঠদানের সুযোগ পেলেন। ওই পাঠদানের সূত্রে ছাত্রদের জন‍্য ভাল মানের পাঠ‍্যপুস্তকের অভাব লক্ষ করে সাতাশ বছরের যুবক মেণ্ডেলিভ নিজেই পুস্তক রচনা শুরু করে দিলেন। কঠোর পরিশ্রম করে একষট্টি দিনের মধ্যে পাঁচশ পাতার বই অরগানিক কেমিস্ট্রি দাঁড়িয়ে গেল।
অরগানিক কেমিস্ট্রির লেখককে রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স পর বৎসর ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে ডেমিডভ পুরস্কারে সম্মানিত করেছিলেন। এটি সমসময়ে রাশিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত পুরস্কার হিসাবে পরিগণিত ছিল।
১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে মেণ্ডেলিভ সেন্ট পিটার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ‍্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন। তখন তাঁর তেত্রিশ বৎসর বয়স।

১৮৬৮ সালে তিনি আরো একটি বই লেখার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলেন। দি প্রিন্সিপলস অফ কেমিস্ট্রি। ১৮৭১ সাল অবধি লিখলেন। এই বইটি রসায়নের জগতে একটি ধ্রুপদী সৃষ্টি হিসাবে পরিচিত হল। অনেক সংস্করণ হল। অনেক ভাষায় এই বইটির অনুবাদ হল।
যখন মেণ্ডেলিভ প্রিন্সিপলস অফ কেমিস্ট্রি বইটির প্রথম খণ্ডের শেষে হ‍্যালোজেন এলিমেন্ট অর্থাৎ ফ্লোরিন, ক্লোরিন, ব্রোমিন, আয়োডিন ইত্যাদি মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও ধর্মগুলি নিয়ে লিখছেন, তখন তিনি খেয়াল করলেন, হ‍্যালোজেনগুলির সঙ্গে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, রুবিডিয়াম, সিজিয়াম ইত্যাদি অ্যালকালি বা ক্ষারীয় ধাতুগুলির তুলনা করলে দুই ভিন্নধর্মী মৌলগুলির মধ‍্যে পারমাণবিক ভার বিষয়ে একটা মিল দেখতে পাওয়া যায়। তখন মেণ্ডেলিভ লক্ষ করতে চাইলেন যে অন‍্য গোত্রের মৌলগুলির মধ‍্যেও এই বৈশিষ্ট্য আছে কি না। সোডিয়াম পটাশিয়াম ইত্যাদি ক্ষারীয় মৌলগুলি নিয়ে তন্নিষ্ঠ চর্চা করে মেণ্ডেলিভ প্রতিষ্ঠা করলেন যে মৌলগুলির পারমাণবিক ভার অনুযায়ী তাদেরকে সজ্জিত করলে শুধুমাত্র গ্রুপের সদস্য মৌলদের বুঝতে সুবিধা হয়, তাই নয়, গ্রুপগুলিকেও সাজাতে সুবিধা হয়। ১৮৬৯ নাগাদ মেণ্ডেলিভ সম সময়ে পরিচিত ছেষট্টিটি মৌলকে নিয়ে একটি পর্যায় সারণি তৈরি করে ফেললেন।
ওই পর্যায় সারণি নিয়ে তিনি রাশিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটির সভায় গবেষণা পত্র পাঠ করেন। তারিখটা ছিল ছয় মার্চ, ১৮৬৯।
তাতে তিনি দেখালেন, মৌলগুলিকে তাদের অ্যাটমিক ভার অনুযায়ী সাজালে তাদের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ‍্যে একটা পর্যাবৃত্ত ছন্দ লক্ষ করা যায়।
বললেন, যে মৌলিক পদার্থগুলি সবচাইতে বেশি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, তাদের অ্যাটমিক ভার খুব কম। আরো বললেন, মৌলপদার্থের অ্যাটমিক ভার লক্ষ করে তাদের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম আগাম বলে দেওয়া চলে।

১৭৮৯ সালে বার্লিনের মার্টিন হাইনরিশ ক্ল‍্যাপরথ পিচব্লেণ্ড আকরিক, যা কিনা প্রকৃতপক্ষে ইউরেনিয়ামের অক্সাইড যৌগ, তা থেকে ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন। তিনি অবশ্য বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরি করতে পারেন নি। ইউরেনিয়াম আবিষ্কারের পঞ্চাশ বছর পরে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে প‍্যারিসের অধ্যাপক ইউজিন মেলকয়ার পেলিগট বিশুদ্ধ ধাতু হিসাবে ইউরেনিয়াম তৈরি করেছেন। ইউরেনিয়াম আবিষ্কারক ক্ল‍্যাপরথ পিচব্লেণ্ডকে নাইট্রিক অ্যাসিডে গলিয়ে সেই মিশ্রণকে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দিয়ে প্রশমিত করে তাকে কাঠকয়লা বা চারকোল দিয়ে গরম করেছিলেন। আর পেলিগট ইউরেনিয়াম টেট্রাক্লোরাইডকে পটাশিয়ামের সঙ্গে গরম করে ধাতু হিসাবে ইউরেনিয়ামকে বিচ্ছিন্ন করেন।
কিন্তু অনেক দিন ধরে ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক ভার আর ভ‍্যালেন্স গণনায় ত্রুটি রয়ে গিয়েছিল। মেণ্ডেলিভ তাঁর পর্যাবৃত্ত নিয়মের নিক্তিতে ফেলে দেখালেন যে পুরোনো ধারণার তিনের বদলে ইউরেনিয়ামের ভ‍্যালেন্স হবে ছয়, আর পারমাণবিক ভার ১২০-র জায়গায় হবে ২৪০।
এখন আমরা বলি ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক ভার ২৩৮ যা কিনা মেণ্ডেলিভের ধারণার খুব কাছাকাছি।
মেণ্ডেলিভের পর্যাবৃত্ত নিয়ম আশ্চর্যভাবে কয়েকটি মৌলিক পদার্থের আবিষ্কার হবার আগেই তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলে দিয়েছিল। এই মৌলিক পদার্থগুলি হল জার্মেনিয়াম, গ‍্যালিয়াম, স্ক‍্যাণ্ডিয়াম আর টেকনেটিয়াম।
এর মধ‍্যে গ‍্যালিয়াম আবিষ্কার হয়েছিল ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে। আবিষ্কারক ছিলেন ফরাসি রসায়নবিদ পল-এমিল লিকক দে বইসবাদরান। এরপরে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কার হয়েছে স্ক‍্যাণ্ডিয়াম। আবিষ্কারক হলেন উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইডিশ রসায়নবিদ অধ‍্যাপক ল‍্যারস ফ্রেডরিক নিলসন। এর সঙ্গে আরেক সুইডিশ রসায়ন বিজ্ঞানী পার টিওডর ক্লিভ এর নামটাও বলতে হবে।
জার্মেনিয়াম আবিষ্কার হল ১৮৮৬ সালে। আবিষ্কার করেছেন জার্মান রসায়নবিদ ক্লিমেন্স উইঙ্কলার।
মেণ্ডেলিভ ভাবী মৌল জার্মেনিয়াম‌ এর নাম রেখেছিলেন একা সিলিকন, গ‍্যালিয়াম এর নাম রেখে ছিলেন একা অ্যালুমিনিয়ম, আর স্ক‍্যাণ্ডিয়াম এর নাম রেখেছিলেন একা বোরন। এই একা শব্দটি তিনি সংস্কৃত ভাষা থেকে চয়ন করেছিলেন।
মেণ্ডেলিভের মৃত্যুর ত্রিশ বছর পরে, ১৯৩৭ সালে আবিষ্কার হয়েছে টেকনেটিয়াম। আবিষ্কারকদ্বয় হলেন এমিলিও সেগ্রি এবং কার্লো পেরিয়ে। দুজনেই ইতালিয়ান। ভাবী মৌল টেকনেটিয়াম কে মেণ্ডেলিভের দেওয়া নাম ছিল একা ম‍্যাঙ্গানিজ।
মেণ্ডেলিভের পর্যাবৃত্ত নিয়ম তাঁকে দুনিয়ার সেরা বিজ্ঞানীদের অন‍্যতম করে দিয়েছে।

মেণ্ডেলিভের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন পরমাণু বিজ্ঞানীরা। ক‍্যালিফরনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লরেন্স বার্কলে ন‍্যাশনাল ল‍্যাবরেটরি, যা বার্কলে ল‍্যাবরেটরি নামে বিশ্ববিখ্যাত, সেখানে ইউরেনিয়ামের পরবর্তী মৌলিক পদার্থ খুঁজে বের করার জোরদার চেষ্টা চলছিল। ১৯৫৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তারিখে অ্যালবার্ট ঘিওরসো, গ্লেন থিওডোর সীবর্গ, গ্রেগরি রবার্ট চোপিন, বার্নার্ড জি হ‍্যারি প্রমুখ বৈজ্ঞানিক গণের একটি দল টিম লিডার স্ট‍্যানলি জি টমসনের পরিচালনায় নতুন নতুন মৌল খোঁজার কাজে ব‍্যস্ত ছিলেন। ওঁরা আইনস্টাইনিয়াম নামে মৌলিক পদার্থের উপর আলফা কণা ছুঁড়ে কৃত্রিম উপায়ে একটি ইউরেনিয়ামোত্তর তেজস্ক্রিয় ধাতব মৌলিক পদার্থ আবিষ্কার করেছেন। ওর পারমাণবিক ক্রমাঙ্ক হল ১০১। অর্থাৎ পরমাণুর কেন্দ্রকে ১০১টি প্রোটন বিদ‍্যমান। মেণ্ডেলিভের নামে ওই নতুন তেজস্ক্রিয় মৌলের নাম দেওয়া হল মেণ্ডেলিভিয়াম।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।