ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ১০৫

ফেরা
লুগড়ি? সেটা কি?
অনিন্দিতা সুধায়।
ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি দেখেছিস?
হ্যাঁ, কেন দেখবো না?
ওই সিনটা মনে করে দ্যাখ। রণবীর দীপিকা কে বলছে- মানালির তিন বৈশিষ্ট্যর কথা। ট্রাউট মাছ, গাঁজা আর এই লুগড়ি। এটা একরকম ফার্মেন্টেড পানীয়, পাহাড়ি চোলাই মদ বলতে পারিস।
শেষে চোলাই খাবি? ছিঃ ছিঃ।
ও, নিজে যে গল্প করলি, দার্জিলিং গিয়ে কে যেন রকসি খেয়ে এসেছে, তোর শুনে খাওয়ার ইচ্ছা জেগেছিল? সেটা কি? ওখানে যেমন রকসি, এখানে তেমন লুগড়ি।
আরে বাহ। তাহলে তো চেখে দেখতেই হয়। বাকি দুটো তো আর খাওয়া যাবে না।
অতএব, দোকান থেকে দুই বোতল কেনা হয়। এক লিটারের জলের বোতল, তার ৭৫ শতাংশ মতো। দুই বোতলে তিনজনের এনাফ।
ঘরে ফিরে, রুটি, পনীর বাটার আর মাশরুম মশালা বলা হয়। খাবার আসলে একটু মুখে দিয়ে বোতল খোলা হয়।
বেশ মিষ্টি মিষ্টি খেতে। দুর এতে কিছু হবে না। খাবার আর লুগড়ি চলতে থাকে। দুই বোতল শেষ হয়। এতোক্ষণ বুঝিনি, এবার খেয়াল হয় ভালোই কিক মারছে। ওরা দুজন কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরে, একটু পরেই শতাব্দীর নাসিকা গর্জন ভেসে আসে। আমি ব্যালকনিতে এসে একটু বসি।
বাইরে তখন বৃষ্টি নেমেছে। ঠান্ডা হাওয়ায়, পাশের হোটেলের টিনের চালে নুপুর ধ্বনি বেজে চলে। দূর পাহাড়ের বাড়িগুলোর আলোর মালা, একে একে নিভতে থাকে। বৃষ্টি, কুয়াশা আর অন্ধকার জড়িয়ে এবার সবাই ঘুমোবে।
আমি খানিক জেগে থাকি একা। বৃষ্টির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফোনে বেজে ওঠে, সেই সদ্য কৈশোর অতিক্রম করতে চলার গান…
ইউহি বরস বরস কালি ঘটা বরসে, হাম ইয়ার ভিগ জায়ে, ইয়ে চাহত কি বারিষ মে..
দূরে কোনো বাড়িতে পুরনো ঘড়ির ঘন্টা বাজে, ঢং, ঢং, ঢং।
এগারোটা।
নিজের বিছানায় উঠি, কম্বল কে আলিঙ্গন করি।
চোখে নেমে আসে ঘুম, ঘুম, ঘুম।।।