মার্গে অনন্য সম্মান মধুরিমা মুখোপাধ্যায় রায় (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা নং – ১১৮
বিষয় – কোলাজ
জীবনের কোলাজ
জীবনের নানা বাঁকে,
অজস্র কোলাজ!
শৈশবের সেই প্রিয় মাটির পুতুল,
দুষ্টুমি করে বাবার হাতে মার খাওয়া,
মায়ের স্নেহের প্রশ্রয় আদর,
বন্ধুদের সাথে গাছে ওঠা- জল ঝাঁপ!
এর সাথে মিলিয়ে দিই,
কৈশোরের শুকতারা।
মাষ্টার মশাইয়ের ভয়ে
অঙ্ক কষা।
যৌবনের কড়া নাড়া,
জীবনের কোলাজে এবার করি যোগ!
মমতার মিষ্টি হাসি,চোখাচোখি,
সেই প্রথম প্রেমের শিহরণ!
তারপর মিলি, আহেলী–
ভালোবাসা? না ঐ ভালোলাগা!
ঐ যৌবনের ধর্ম!
তরুণ জীবন দেয় হাতছানি!
চোখে চশমা এখন।
সরকারী দপ্তরের কেরাণীর জীবন!
জীবনে এসেছে রীনা, মায়ের বান্ধবীর মেয়ে।
সিঁথির সিঁদুরে আমার নামটি লেখা।
সিটি গোল্ডের চুড়ি, সস্তার ফেস পাউডার!
সাধ আর সাধ্যের বৈষম্য।
অভিযোগ- অনুযোগ- মন কষাকষি!
মায়ের সুগারের বড়ি,
বাবার ফিজিওথেরাপি।
এসেছে বুবাই,
বছর তিনেক বাদে ওর বোন বিহু।
ঝুমঝুমি, কান্না খুনসুটি,
কোলাজ বেড়েছে আয়তনে।
চুলে পাক,কাগজের স্তুপে মাথা গুঁজে-
অফিসে করছি হিসেব।
হোম লোন কিভাবে মিটবে!
কুরে কুরে খাচ্ছে- মস্তিষ্কের সমস্ত কোষ!
বন্ধক আছে রীনার বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া বালাজোড়া,
বুবাই এম . বি. এ পড়ছে যে!
বিহুর বিয়ের জন্য করা- এল. আই. সির প্রিমিয়াম বাকি এখনও—
হঠাৎই বুকে ব্যথা।
জীবনের কোলাজে সমাপ্তির যতি চিহ্ন!
হয়তো জীবনের কোলাজটা শেষ,
হয়তো বা না!
বিধবা রীনার হা- হুতাশ,
মায়ের কান্না ইত্যাদি আমার জীবনের পরেও আমার জীবন কোলাজে বোলাচ্ছে কালি !
জীবন থেমে যায়, জীবনের কোলাজ থামেনা।
শাখা- প্রশাখা এঁকে চলে আরও কতো চিত্ররূপ।
আসলে প্রতিটি জীবনই- কোথায় যেন অমর!!