মার্গে অনন্য সম্মান খুশী সরকার (সর্বোত্তম)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১১৪
বিষয় – নবান্ন

সম্প্রীতির বন্ধন

কুয়াশার ওই ঘোমটা টেনে হৈমন্তিকা আসে,
সারা মাঠের বক্ষ জুড়ে সোনালী ধান হাসে।
শিশিরবিন্দু ধানের শীষে মু্ক্তো যেন জ্বলে,
শিশির ভারে নুয়ে পড়ে লজ্জাবতী পলে।

জড়িয়ে গায়ে হলুদ শাড়ি নূপুর নিক্কন পায়ে,
ঠমক ঠমক চলে যেন শীতার্ত ওই বায়ে।
ধান্য লক্ষ্মীর রূপে মুগ্ধ চাষির মুখে হাসি,
পাকা ফসল ঘরে এনে আনন্দে যায় ভাসি।

চোখে মিষ্টি ছবি ভাসে নবান্ন যে ঘরে,
নতুন ধানের অন্ন দিয়ে প্রসাদ তৈরি করে।
আমন ধানের চাল থেকে ওই আতপ চাল আর চিড়ে,
নলেন গুড় আর ফলফলাদি প্রসাদ থাকে ঘিরে।

কাঁচা দুধ আর চিনি দিয়ে এমন প্রসাদ হবে,
স্বাদে গন্ধের অপূর্ব এক ঘ্রাণে মুগ্ধ রবে।
ঝা-চকচকে গ্রাম্য উঠোন লেপে গোবর দিয়ে,
আলপনা দেয় পিটুলিতে শুদ্ধ ভক্তি নিয়ে।

নবান্ন এক মিলন উৎসব গ্রাম-বাংলার বুকে,
শুদ্ধাচারে ঈশ্বর ভক্তি চাষীর পরম সুখে।
এই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেয় চাষী,
নতুন প্রসাদ দেয় কৃষাণী মুখে নিয়ে হাসি।

প্রতিবেশী স্বজন বন্ধু সবার সাথে মিলে,
নতুন ধানের অন্ন ভোজন মহার্ঘ্য হয় তিলে।
ঈশ্বরেরই নামে প্রথম ভোগ নিবেদন করে,
সেই প্রসাদ খায় জনে জনে প্রাণে খুশি ভরে।

দুপুরে খায় উঠোনে সব আঁটির উপর বসে,
ভাজা চিড়ে মুলো আদা দই চিড়ে খায় রসে।
রাতে খায় সব নয় ব্যঞ্জনে নতুন সবজি মাছে ভাতে,
পাড়ার সবাই সারি সারি খায় একসঙ্গে সাথে।

আনন্দ আর হই হুল্লোড়ে, সম্প্রীতির এক বন্ধন,
যত কষ্টে থাকুক চাষি হয় না নিয়ম খণ্ডন।
চির দারিদ্র্যের সঙ্গী চাষী সুখ জোটে না কভু,
এই একটি দিন নবান্নে তার সুখ ভরে দেন প্রভু।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।