মার্গে অনন্য সম্মান ইন্দিরা দত্ত (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টির সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১০৩
বিষয়- প্রিয় লেখক
আমার প্রিয় লেখক আমাদের বিভূতিভূষণ
এক বাঙালি ঔপন্যাসিক, গল্পকার, অমর কথা সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক।১৮৯৪ সালের ১২ ই সেপ্টেম্বর নদীয়া জেলার কল্যাণী শহরের কাছে মুরাতিপুর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অপুর আত্ম প্রক্ষেপ ‘ পথের পাঁচালীর অমরস্রষ্টা।
বিভূতিভূষণ এলেন গ্রামের গন্ধ নিয়ে। তার মতো করে গ্রামের বর্ণনা ক’জন বা দিতে পেরেছে? ভাঁটফুল, পিটুলি, মেঠো ঘাসের গন্ধ আষ্টে পৃষ্ঠে জড়িয়ে রইল তার লেখায়। বনানীর শ্যামলিমা, জঙ্গল উপস্থিত হতো প্রধান চরিত্র হিসেবে। টেলিফোনের খুঁটি, বিদ্যুতের তার, রেললাইনের বিস্ময় বোঝার মতো চোখ দিয়ে গেলেন। তাঁর লেখা অতিবাস্তব। রাঙি গাইয়ের বাছুর খুঁজতে বেরিয়ে অজানা মাঠে… অচেনার টানে ছুটে বেরিয়ে এসে’ ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে কথা বলা’ এমন কিশোর-কিশোরীই তো গ্রামে অপার বিস্ময় ।
স্ত্রীর মৃত্যুর পরে কিছুদিন তিনি লেখেন নি । তারপর ‘ দেবযান’ ,’ চাঁদের পাহাড়’,’ অথৈ জল’,’ নিশিপদ্ম ‘,’ হিংএর কচুরি’ ,’অমর প্রেম’,’ আরণ্যক’,’ ইচ্ছামতী’,’পথের পাঁচালী’,’ অপুর সংসার’, ‘ অপরাজিত’ বিশ্ববন্দিত ও বিশ্বনন্দিত ।নির্যাতিতা পৃথিবীর স্বাধীন অমঙ্গলের সূচনা করে… তা বর্ণনা করলেন ‘অশনি সংকেত ‘রচনায় ।নিষিদ্ধ পল্লীর জীবন নিয়ে লিখলেন’ হিংএর কচুরি’ ,’ অমর প্রেম’,’ নিশিপদ্ম ‘।
অসাধারণ মুন্সীযানায় লিখলেন ‘চাঁদের পাহাড়’, বিনোদন জগতের চরিত্র নিয়ে লিখলেন ‘ অথৈ জল’।’ দেবযান’ অপার্থিব উপন্যাস,’ পুঁইমাচা ‘গল্প যতবার পড়া যায় চোখে জল আসে ।’ মেঘমল্লার’ এ বাঁশির সুরে দেবী সরস্বতীকে বন্দিনী করার ছলনা। এতো এক সত্য। প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে জ্ঞান বাধা যায়?
১৯৫০ সালের ১লা নভেম্বর ঘাটশিলায় ভাই ডা: বিহারী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন।১৯৫৬ সালে ইছামতী উপন্যাসের জন্য মরণোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার পান। আপাতজিনিষ তার লেখায় মহীয়ান হয়েছে। পরম যত্নে, ভালোবাসায়, জ্ঞানদেবীর নথ থেকে হীরকখণ্ডের দ্যুতি ছড়িয়েছেন তার লেখায়। শান্ত আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে বাংলা সাহিত্য ।