সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে অনিরুদ্ধ গোস্বামী (পর্ব – ১৭)

অদৃশ্য প্রজাপতি

প্রোডাক্ট লঞ্চ
বুধ বার যথারীতি সেলস টীম এবং আমরা মার্কেটিং টীম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ডাক্তার প্রমোশন এ নেমে পড়লাম। বিশেষ কিছু ডাক্তার যাদের মতামত অন্যেরা গুরুত্ব দিয়ে শোনেন তাদের নিয়ে
সাইন্টিফিক মিটিং করা হলো সন্ধ্যে বেলায়। সেটার লাইভ ভিডিও কনফারেন্সিং অন্য সব হেডকোয়ার্টার এ দেখানো হল। বেশ কিছু সাফল্যর খবর ও আসতে শুরু করলো। ডাক্তার রা ফ্রি সিরিঞ্জ এর কনসেপ্ট টা খুবই ভালো ভাবে নিয়েছেন। পরের দশ দিন বিভিন্ন জায়গায় টুর রাখলাম। সেখানকার প্রধান ডাক্তার দের সাথে দেখা করে আমাদের প্রোডাক্ট টা আলোচনা করলাম। আমাদের মিলিত প্রচেষ্টা অচিরেই ফল দিতে শুরু করলো। সেলস এর গ্রাফ উর্ধমুখী।

তিন মাস পরের কথা
যেকোনো নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ এর প্রথম তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে বোঝা যাবে যে এটি মার্কেট এ দাঁড়াবে কি না ?
নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ ক্যাটাগরি তে আমরা একদম উপরে। যা আমরা আশা করেছিলাম তার থেকে অনেক গুন্ বেশি আমরা ব্যবসা করছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমাদের প্রতিযোগী কোম্পানির সেল নেমে তলে এসে ঠেকেছে। ডিসকাউন্ট বাড়িয়ে দিয়েও ঠেকাতে পারছে না। সাইন্টিফিক ডিসকাশন আর আমাদের মার্কেটিং এর প্ল্যান ডাক্তার রা খুবই প্রশংসা করেছেন।
ম্যানেজিং ডিরেক্টর খুব ই খুশি। আমাকে প্রমোশন দিয়ে “AMA ” (এশিয়া ,মিডল ইস্ট ,আফ্রিকা )রিজিওন এর মার্কেটিং হেড করে পাঠাতে চান।কয়েকদিন আগে নিজে টেলিফোন করে আমাকে তৈরী থাকতে বলেছেন
খবর টা নিয়ে বিন্সি এলো বললো বস “অভিনন্দন” আপনি কবে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর। মেইল এসেছে। আমাকে কপি মার্ক করা আছে।
নীল : তাই ,মেইল এসেছে নাকি ,তুমি খুশি হওনি ?এই সাফল্যে সমান ভাগিদার তুমিও।
বিন্সি : হা বস আমি খুশি , চোখে জলকণা চিক চিক করছে। কিছুক্ষন চেয়ে রইলো চোখের দিকে আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। আর সে দাঁড়ালো না ডাকলাম তাকে তবু ও !
আথিরা কে জানানো যেত যদি।
রাতে ব্যালকনি অনেক রাত অব্দি বসে রইলাম। কেরালা তে তো আর কয়েকদিন। মিস করবো অনেক কে আর কিছু এইরকম মুহূর্ত আর আমার এই ব্যালকনি- একাকিত্বকে আর ব্যাক ওয়াটার কে। হয়তো সবাই থাকবে হারিয়ে যাবে এই মুহূর্ত গুলো।

‘আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন- কতদিন আমিও তোমাকে
খুঁজি নাকো;- এক নক্ষত্রের নিচে তবু- একই আলো পৃথিবীর পারে
আমরা দুজনে আছি; পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,
হয় নাকি?
(জীবনানন্দ দাশ)

© অনিরুদ্ধ

লুপ ক্লোজার
প্রমোশন এর মেইল টা পেয়ে বাড়িতে ফোন করে খবর টা জানালাম। তারা তো আনন্দে আত্মহারা। এরপর বাবা বললো সব ঠিক আছে ,কিন্তু আথিরার কিছু খবর আছে?
নীল:না ,বাবা ,কিন্তু স্ক্যুটি টার সূত্র ধরে কি খোঁজ পেয়েছি সেটা তো তোমাকে বলেছি। যদি আমাদের রাইভাল কোম্পানির কেউ হয় তো চাকরি তে সমস্যা হতে পারে।
বাবা: কেন প্রেম কি কেউ করে না। শোন আমার মনে হয় ত্রিভান্দ্রাম গিয়ে তোর একবার খোঁজ নিয়ে আসা উচিত। কারণ টা জানা দরকার। কেরালা থেকে চলে যাবার আগে এটা তুই যদি পরিষ্কার না হয়ে যায় তা হলে সারা জীবন এই প্রশ্ন তোকে তাড়া করে বেড়াবে। কেন সে এটা করলো …ইত্যাদি। তুই এটা সারা জীবন বয়ে বেড়াবি,শান্তি পাবি না । তোকে এগোতে দেবেনা অন্য কোনো রিলেসন এর ক্ষেত্রেও। আর যখন একটা ঠিকানা পাওয়া গেছে তখন তোর যাওয়া জরুরি।
নীল :কিন্তু, দুদিনের আলাপ বই তো নয় !

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *