সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে তুলি রায় (পর্ব – ৮)

নামকরণ

দেখিতে দেখিতে এতগুলি পর্ব পার করিয়া আসিয়াছি তাহা পিছন ফিরিয়া না দেখিলে হয়তো বুঝিতেই পারিতাম না পূর্বে কি লিখিয়াছিলাম। অপস্মৃতির আওতায় তো অনেককিছুই তালিকা-ভুক্ত হইয়া থাকে। সুতরাং ভুলিয়া থাকা মনুষ্যজনিতই অপরাধ । শীতকালীন নিদ্রা যেমন করিয়া আচ্ছাদিত করিয়া রাখে আমাদিগের! স্মৃতিচারণের সুযোগটুকু দিতে সে অপারগ। তবু যতটুকু হাতড়াইয়া জোগাড় করিতে পারিয়াছি, তাহা লইয়া পুনরায় আসিয়া উপস্থিত হইলাম। যদিও বসন্ত আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে । এখন প্রশ্ন আসিতে পারে নামকরণের আবার ঋতু কেন? বাহ্ আর সবকিছুর মতো কেন তাহা নহে? নামকরণ, স্থান-কাল-পাত্র ভেদেই নির্ধারিত হইয়া থাকে। তেমনভাবেই মননের যাবতীয় নির্ধারনে ঋতুর ভূমিকা আছে বৈকি। অথচ এমন অনেককিছুই থাকে যাহার নাম জ্ঞাতার্তে নাই তবুও তাহা আকৃষ্ট করিয়া আনন্দ দান করিয়া থাকে। কিন্তু নামকরণের সহিত শুধু কি আনন্দের যোগসূত্র? বাকি অনুভূতিগুলির কি কোন অস্তিত্বই নাই? হয়তোবা আছে অথবা নাই। যাহা’সকল দৃশ্য দেখিতেছি তাহাই কি একমাত্র সত্য?তাহার বাহিরে কি কিছুই অবশিষ্ট নাই? কেন শুধু সীমানা টানিয়া দিয়া শিলমোহর লাগাইয়া দিতে পারিলেই সমাধান মিলিবে? শিলমোহর লাগাইলেই বুঝি সব শেষ হইয়া যায়! যাহা থাকিয়া গেলো তাহার কী কোন অস্তিত্বই নাই? সম্পূর্ণতা না পাইলেই তাহা মৃত হইয়া যায়? কেনই বা তাহা আর একবার সুযোগ পাইবে না? এই জগতে সবকিছুরই থাকিবার অধিকার আছে তাহার অবস্থান অনুযায়ী। আর তাহা চিহ্নিতকরণ করে একমাত্র প্রকৃতি। তাহার কাছে সকলই স্বীকৃত। তিনিই নির্ধারক। আমরাই কেবল চিহ্নত করিতে পারি তাহা স্বীকার্য হইলেও বা না হইলেও। চিহ্নিতকরণ আসলে একটি খুব সহজিয়া পন্থা। আবেগের বশবর্তী হইয়া আজ যাহা চিহ্নিত করিতেছি সময়কালে তাহাও প্রকারান্তর ঘটিবে না তাহা কে বলিতে পারে? ঘটনার পরবর্তী অংশে একাধিক উপপাদ্য রচিত হয় ইচ্ছে অনুসারে। অথচ তাহার পূর্বের কারণসকল অনুসন্ধান করিবার প্রচেষ্টা করিলে সত্য সামনে আসিয়া উপস্থিত হয়। ক্ষণিক সময়ের ব্যবধানে চক্ষু বিস্মিত হইলে তাহাও আড়াল হইয়া যায়। যেমন করিয়া মেঘ সূর্যকে আড়াল করিয়া ফেলে। যদিও তাহা সাময়িক বৈকি। সময়ের অপেক্ষা করিলে তাহাও সরিয়া যায়।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।