কথায় গানে সৌমজিতা সাহা

সাধনে ভজনে মীরা

ভালোবাসার মাধ্যমে কৃষ্ণ উপাসনা ছিল ভক্তিসাধিকা মীরাবাঈ এর সাধনার প্রধান বৈশিষ্ট্য। গুরুনানক, কবীর, চৈতন্যদেব,রামানন্দ, নামদেব প্রমুখরা ভক্তিবাদের যে বাতাবরণ তৈরী করেছিলেন মীরা ছিলেন তারই ফলশ্রুতি।
মীরা ছিলেন একজন রাজপুত রাজকন্যা। 1498 খ্রিস্টাব্দে বর্তমান রাজস্থানের কুড়কি গ্রামে রতন সিংহ রাঠোর এর ঘর আলো করে জন্ম নেয় কৃষ্ণ ভক্ত মীরা।
শৈশবেই তাঁর বিবাহ হয় চিতোর রাজ রানা সাঙ্গর বড় পুত্র ভোজ রাজের সাথে। বিবাহের বহু পূর্বেই গিরিধারী কে স্বামী হিসেবে স্বীকার করে নেয় মীরা, তাঁর এই ঈশ্বরভক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকও, বহুবার ষড়যন্ত্রের স্বীকার হতে হয় মীরাকে। কখনও খাবারে বিষ মিশিয়ে আবার কখনও পুজোর ফুলের মধ্যে সাপ পাঠিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয় মীরার ঈশ্বর ভক্তির।
1527 খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট বাবর এর বিরুদ্ধে যুদ্ধেয় নিহত হন মীরার স্বামী ভোজ রাজ।
শিশুকালে মাতৃহারা মীরার কাছে এ ছিল এক অসহনীয় বেদনা। তিনি উপলব্ধি করেন এই প্রেম আবেগ সম্পর্ক সবই মায়ার বাঁধন, শুধু গিরিধারী ই সত্য, তিনিই পরম পুরুষ।
স্বামীর মৃত্যুর বেশ কিছুকাল পর মীরা চলে যান বৃন্দাবনে কৃষ্ণনাম এর উদ্দেশ্য নিয়ে। কথিত রয়েছে তাঁর গুরু ছিলেন রবিদাস আবার মত পার্থক্য অনুযায়ী রূপ গোস্বামী।
বৈষ্ণব ভক্তিবাদ আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন মীরা।
প্রায় 1200-1300 টি ভজন রচনা করেছিলেন উনি, যা আজও সমানভানে জনপ্রিয় ও প্রচলিত।
ভক্তিবাদী ধারায় রচিত এইসব ভজনের মধ্যে দিয়েই তিনি তাঁর গিরিধারী এর প্রতি প্রেম কে ব্যক্ত করেছেন।

“মীরা কো প্রভু সাঁচি দাসী বানাও।
ঝুটে ধংধোসে মেরা ফংদ ছুড়াও।।
লুটে হি লেত বিবেক কা ডেরা।
বুদ্ধি বল যদ‍্যাপি করূঁ বহুতেরা।।
হায় রাম নাহি কছু বাস্ মেরা।
মরত হুঁ বিবস প্রভু ধাও সবেরা।।
ধর্ম উপদেশ নিত প্রতী সুনতি হুঁ।
মন কুঁচাল সে ভি ডরতি হুঁ।।
সদা সাধু সেবা করতি হুঁ।
সুমিরণ ধ্যান মে চিত ধরতি হুঁ।।
ভক্তি মার্গ দাসী কো দিখাও।
মীরা কো প্রভু সচি দাসী বানাও।।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *