শিক্ষক দিবস, জীবনের পথে একজন শিক্ষকের যে ক্লান্তিহীন অবদান, তা সময়ের সাথে সাথে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ বদলেছে, বদলেছে শিক্ষার ধরণ, বদলেছে রুচিবোধ, আত্মসমীক্ষার উপায়গুলিও পরিবর্তন হয়েছে অনেকটাই। কেন গুরু, কিসের শিক্ষক, শিক্ষক-শিক্ষা-জ্ঞান-শিক্ষার্থী এইসবই তো একটি সুন্দর মালায় গাঁথা।পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে সমগ্র একটি জগৎ রয়েছে, জগৎ রয়েছে স্বপ্ন দেখার, স্বপ্ন আহরণ করার, সেই মূল মন্ত্রটিই আমাদের শিক্ষকরা আমাদের মনে গেঁথে দিতেন। সময়, স্থান, কাল, পাত্র দেখে কথা বলা, শিক্ষার পুনর্নির্মাণ- এই সবই আজ এক অতি তুচ্ছ জায়গায় অবস্থান করছে, রুচি এবং শালীনতা দিনের পর দিন নিম্নগামী, এবং আগামীর পথ দেখানোর সূর্যশক্তিরা নিজেরাই আজ তীব্র বিরোধিতায় আক্রান্ত। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত একটি দুর্বোধ্য সম্পর্ক তৈরী হচ্ছে, ফাটল ধরছে তাদের চিন্তাভাবনায়, বাক্য আদানপ্রদানে চোখে পড়ছে সামঞ্জস্যের অভাব। এই সবকিছুই যে পরিকল্পিত তা কিন্তু নয়, কিন্তু তাতেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কটি অনেকটাই নষ্ট হচ্ছে।
যত দিন যাচ্ছে আমাদের জীবন আরো কঠিন, আরো বন্ধুর হচ্ছে, আমাদের উচিত সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের জানা, উপলব্ধি করা। স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গৌতম বুদ্ধের শিক্ষার দর্শনে অন্ধকারের আবরণ ভেদ করে আমরা যাতে সঠিক আলোর দিশা পাই। শিক্ষা আর অশিক্ষার ফারাক অনেকটাই, কিন্তু সমস্যার জায়গা তৈরী হয় যখন অর্ধশিক্ষার রাজত্ব তৈরী হতে থাকে। মানুষের মানুষকে সাহায্য করার প্রবণতা হারিয়ে গেলে প্রচন্ড সমস্যার তৈরী হয়। আমরা আশা করবো ভালো মানুষ গড়ে তোলার, এবং সর্বাগ্রে, শিক্ষা যাতে পুঁথিগত না হয়, শিক্ষা যাতে ভালো মানুষ হতে সাহায্য করে সেই ব্যাপারে।