গতকাল শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় বিকালবেলা অটোরিকশা দিয়ে গাজীপুরের কোনাবাড়ি যাচ্ছিলাম। যেতে যেতে রিকশায় যাত্রী হিসাবে বসে থাকা এক মধ্য বয়সী মহিলার চোখে জল গড়িয়ে পড়ছিলো। আমারও মনটা তখন কেঁদে উঠল, জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা কিছু মনে না করলে আপনার নামটি কি,আর কাঁদছেন কেন? তখন ঐ মহিলা তার মনে জমে থাকা কষ্টের কথা সব বলতে লাগলো! বড় ঈদের ছুটি শেষ তাই তার কর্মস্থল কোনাবাড়ির অনন্ত নামক পোশাক কারখানায় ফিরছে। বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন, গ্রামের বাড়িতে ছোট ছোট দুটি অবুঝ শিশু বাচ্চা রেখে এসেছে। পথিমধ্যে আরো জানতে পারলো যে, তার চাকুরী হয়তো চলে গিয়েছে কারণ তার জাতীয় পরিচয় পত্র ঐ অফিসে জমা দেয়নি,তার স্বামী নেশাখোর আরো একটি বিয়ে করেছে এবং তাকে ছেড়ে দিয়েছে, তার জাতীয় পরিচয় পত্র ঐ স্বামীর কাছে, অনেক অনুসন্ধান করেও স্বামীর খোঁজ মিলেছে না,স্বামীকে পেলে সংসার করা না হোক অনন্ত জাতীয় পরিচয় পত্রটা পাওয়া যেতো। মহিলাটি এতই সহজ ও সরল যে, পরিচয় পত্রের একটা ফটোকপিও নিজের কাছে রাখেনি। জিজ্ঞেস করলাম এখন কি করবেন, কিভাবে সংসার ও খরচ জোগাড় করবেন, সে বললো বাসা বাসা ও পাড়া মহল্লায় পুরাতন কাপড় ফেরী করে বেড়াবে। এরকম অসংখ্য ইভা রাণী প্রতিনিয়তই দুঃখ ও কষ্ট বয়ে বেড়াছে, নীরবে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। কেউ রাখে না তাদের খবর।