বর্ষায় প্রেমের চিঠিতে চিরন্তন ব্যানার্জি

১| মিথ্যা

দুচোখ অন্ধ হল, বন নদী পাহাড়ের ভালোবাসা দেখে,
একথা সঠিক জানি, সে গেছে সাগরপাড়ে, বাঁশী ফেলে রেখে।
আমিও ভীষণ বেগে, ঝর্ণার মতো তাকে দিয়েছি বিদায়,
সে যেমন আছে থাক, আমার নিভৃতবাস গাছের ছায়ায়;
সে গাছে কুমারী কুঁড়ি, মেঘ তাকে বলে গেল ডেকে,
আজ নয়, কাল যাবো, বৃষ্টির চুম্বন মেখে।
আমি বুঝি, একই কথা মেঘ বলে সব বর্ষায়;
চুপ থাকি,
জানি রাইকিশোরীরা বেঁচে থাকে, এটুকু আশায়।

২| অমিত্রাক্ষর

বললে তুমি গোলাপ দিও, আমার হাতে সূর্যমুখী
তেমন করে ভাবলে বসে, এই জগতে কজন সুখি।
আমায় বরং পত্র লিখো, ফর্দ রেখো আস্তাকুড়ে
ভীষণ জ্বরে যেমন করে, বৃষ্টি নামে শহর জুড়ে।
তোমার নামে খাতার ভাঁজে, কঠিন কঠিন পদ্য লেখা
তুমি আবার উপন্যাসেই আটকে আছো, হয়না দেখা।
এই বাদলে শহর জুড়ে জল জমেছে রাস্তাঘাটে
এমন সময় কে আর বল অকারণে একলা হাঁটে।
তারচেয়ে বরং মিল হয়ে যাক, পদ্য এবং উপন্যাসে
হঠাৎ শুনে রামধনু তাই , মেঘের ফাঁকে মুচকি হাসে;
তোমার চোখেও মাঝে মাঝেই, ভালোবাসা দিচ্ছে উঁকি
কালকে নাহয় গোলাপ দেবো, আজকে রাখো সূর্যমুখী।

চিঠি
জানলায় শুনি বৃষ্টির স্বরলিপি,
দূরে কোনখানে ফিরোজা বেগম বাজে;
স্মৃতিরা খুলেছে ভোলা গল্পের ঝাঁপি-
তোমারও কি আজ মন লাগছেনা কাজে?
এমন দিনে কি প্রবাসী যক্ষ একা
মেঘদূত পড়ে প্রেমিকার কথা ভেবে?
ফের যদি হয় এই বর্ষায় দেখা,
তোমার বাড়ির আসল ঠিকানা দেবে?
আমার শহর ভীষণ গদ্যময়;
খবর লিখছে সার বাঁধা অক্ষরে,
মেঘেদের চলা নিয়ম মেনে তো নয়,
টুপটাপ করে কবিতা পড়ছে ঝরে।
সেই কবিতার কাগজের ছোট নাও,
ভাসিয়ে দিয়েছি তোমার ঘরের দিকে;
ডুবে যাবে পথে সে তো জানি আমি তাও,
কবিতা ফুরোবে প্রিয়তমাসু কে লিখে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।