সময়। যা ফেরত আসে স্মৃতিচারণে প্রতিদিনের রাতে। কখনো ভয়ঙ্কর আবার কখনো ফিরে পাওয়ার আনন্দে। ভাবি সময়টা কি অতীত শাপের রক্তক্ষরণ? অবুঝ মন আমাকে টেনে নেয় পাওয়ার দুর্বোধ্য আনন্দে। কি পেলাম আর কি পাইনি হিসেবে মেলাতে মেলাতে কখন যে ভোর হয় বুঝতেও পারিনা। অন্ধকারকে এখন ভয় হয়। যদি সকাল না আসে? পাখিরা কিচিরমিচির করে ডাক না দেয়? যদি অমলের মা বাসি দরজায় ঘটি জল না ঢালে? আর যদি আমার তৃপ্ত প্রেম আমাকে নাড়া না দেয়? কি পাপে আজ আর এসময়? প্রশ্ন প্রতিক্ষণের। আমি কি এক হৃদয়হীন মানুষ যেখানে রাখা আছে এক কুৎসিত কুটির। যে কুটিরে শব্দ আর ছন্দে নেচে ওঠে না কোনো মানবী?
পেলাম আর পেয়েছি তাকে। এখন আমি নির্বাসন চাই না। চাই চিরকালীন অটুট বন্ধন। রোজ আসে ঠিক এসময়। লাল আলতা পায়ে নুপুরের ধ্বনি আমাকে বিচলিত করে। আমি দেখি। আনন্দে মেতে উঠি। ঝুমঝুম আওয়াজ আর আকৃষ্ট সুবাসের এই কাহিনী। কেও জানবে না কোনোদিন। কেনইবা জানবে অলিখিত সময়ের রূপকথা। কি দায় ইতিহাসের? নাহ। থাক চিন্তা এখন। চোখ ছুটছে সারিসারি মানুষের দিকে। চোখের জল শুকিয়ে মরুভূমি। আমি দৌড়াচ্ছি গভীরে। বালুরাশি আর দূরে অভ্রের হাতছানি। একটু জল চাই। কেও দিতে পারো শুস্ক গলায় একফোঁটা জল? নতজানু। দুহাত পিপাসাকাতর গলায়। আমি বাঁচতে চাই। এই অনন্ত চিৎকার ধ্বনিত হলো। আবির্ভূত এক অবয়ব যে প্রতিক্ষণ আর প্রতিপল। নরম হাত আমার শরীর আবাহনে। মিষ্টি হাসি যার সম্পদ ভান্ডার। আমি পায়ের দিকে তাকিয়ে বলি – হা রে তোর নূপুরটা কোথায়?
জানো আজ নূপুরটা পুকুরে তলিয়ে গেছে।
আমি ঘুম চোখে ছটফট। বসিয়ে রেখে ছুটছি সন্ধানে। ডুব দিয়েছি। পুকুর ডুবে সাঁতরে এপাশ ওপাশ। সকাল রোদ আর রূপালী স্বপ্নের নুপুর আমার হাতে। ছুটছি। এক ছুটে ঘর। দেখি আমার বিছানায় বসে পা দোলাচ্ছে। হাঁটু গেড়ে মুখের দিকে তাকিয়ে আমি। রাঙা পায়ে পরিয়ে দিলাম হারানো নুপুর।