• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্ক ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ৭৬)

ছিয়াত্তর

আমি চা খাওয়া শেষ করার আগেই দেখি পুনিত আমার ঘরের দরজা নক করে ঢুকল।, “বলল চল বন্ধু ঘুরে আসি “। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,”কোথায়?দেখলাম পুনিতের হাতেও চায়ের কাপ। বেশ জোগাড়ে ছেলে বোঝাই যায় ।আবার বাল্মীকির মহিমাও কম নয় । পুনিত বলল, এই এদিক ওদিক, ঘোরে বসেই বা কি করবে? অবশ্য তোমার যদি কাজ থাকে তাহলে থাক “। বলেই আমাকে চোখ মারলো । ওর ইশারায় বুঝলাম ও আমাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যেতে চাইছে।কিন্তু আমি যে এখনও রেক্টঙল ধাঁধাঁ সমাধান করতে পারিনি । আবার এও জানিনা এগুলোই শেষ কিনা, নাকি এর পর আরও আছে । একের পর এক ধাঁধার পর্দা ফেলা আছে । একটা পর্দা সরলে আরও একটা পর্দা, এইতো চলছে।ও কেন আমাকে নিয়ে বেরোতে চাইছে সেটাও জানা দরকার । বললাম,”চল একটু ঘুরেই আসি “। দশ মিনিটের মধ্যে দুজনেই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম । বাড়ি থেকে একটু দূরে গিয়েই পুনিত বলল,” বস কয়েকটা ইন্সট্রাকশন আছে ম্যাডাম এর । প্রথম হল ওই ধাপার জায়গাটা দেখা যেখানে আপনি কিডন্যাপের পর নিজেকে আবিষ্কার করেছিলেন ।মানে জ্ঞান ফিরে পাওয়ার সময় আপনি যেখানে ছিলেন ।আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “আমরা কি এখন ওখানে যাব?”পুনিত মাথা নেড়ে বললো,”এখন নয় স্যার, ঠিক সময় হোলে যাব ।যথা সময় হলেই জানতে পারবেন । এখন এক কাজ করুন তো ।আপনার বান্ধবী লুলিয়াকে ফোন করুন । বলুন এখুনি আপনি ওনার বাড়ি যেতে চান । আপনার এক বন্ধু দিল্লি থেকে এসেছে তার সঙ্গে আলাপ করতে চায় । ম্যাডামের ইন্সট্রাকশন যে লুলিয়ার ফ্ল্যাট আর ডঃ চোঙদারের ফ্ল্যাট থরো সার্চ করতে হবে ।”পুনিতের কথা মতো আমি লুলিয়াকে ফোন করলাম । কিন্তু লুলিয়া ফোন ধরলো না ।বাড়ি থেকে প্রায় দু কিলোমিটার পেরিয়ে এসেছি। বিজনসেতুর কাছে এসে প্রায় বার পাঁচেক লুলিয়েকে ফোন করলাম কিন্তু ধরলো না। আমি পুনিতকে সেটা বললাম । পুনিত বলল,”চলুন স্যার ওনার বাড়ি চলে যাই আমরা “। বললাম,”ট্যাক্সি ডাকি?”পুনিত হঠাৎ দৌড়োতে শুরু করলো বলল,”চলুন বাসটা ধরবো “। বিজনসেতুর ওপর রানিং বাসে পুনিত ও আমি উঠে পড়লাম ।অনঅভ্যাসের জন্য আমি হাপাচ্ছি।পুনিত লজ্জিত হয়ে বলল, “স্যার এই কদিন এইভাবেই আমাদের মুভ করতে হবে,”। আমিও হেসে মাথা নেড়ে সায় দিলাম । আমরা তিনটে বাস বদলে লেক গার্ডেন্স পৌছালাম ।বাসস্ট্যান্ড পৌঁছে আবার লুলিয়াকে ফোন করলাম। কিন্তু এবারেও ধরলো না । আমরা হাঁটতে হাঁটতে লুলিয়ার বাড়ি এসে পৌঁছলাম।পুরো বাড়িটাই অন্ধকারে ডুবে আছে।ডঃ চোঙদার এর নীচের তলায় তো তালা দেয়াই থাকে। লুলিয়ার দোতলায় ওঠার মেন গেটেও তালা দেওয়া । হঠাৎ পুনিত বলে উঠল,”ওয়াণ্ডারফুল “স্যার আপনি বাড়ি ফিরে যান । কিন্তু ডাইরেক্ট যাবেননা । একটু ঘুরে ফিরে যাবেন । আর এই নিন এটা ধরুন রাতের ডিনারে সুযোগ বুঝে মিশিয়ে দেবেন। এমন পদে মেসেবেন যেটা বাল্মীকি নিশ্চিত রূপে খাবে । ওকে আজ ঘুম পড়ানো খুব দরকার ।
আমি পুনিতের কথা মতো ডঃ চোঙদারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম । পেছন থেকে খটাস করে একটা আওয়াজ পেলাম । কোনো কিছু ভাঙা তারপর কলাপ্সিবল গেট টানার আওয়াজ পেলাম । এবার বুঝলাম খটাস শব্দ টা তালা ভাঙার । তার মানে পুনিত তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকলো । সত্যি পুলিশের লোক সব পারে ।আমাদের সাহস বা ক্ষমতাতেও কুলোতো না । আমি পেছনে তাকালাম না গতি বাড়িয়ে দিলাম । রাস্তাতেই যাদবপুর 8B বাসস্ট্যান্ড এর একটা অটো পেলাম । ওকে হাত দেখিয়ে উঠে পড়লাম । ইন্সট্রাকশন অনুযাই আমার যাওয়া আসার রাস্তা ঘোরালো হতে হবে । সোজা রোজের রাস্তায় গেলে হবে না ।8B বাসস্ট্যান্ড এ নেমে অনিকেততে ফোন করলাম ।অনিকেত ফোন ধরল। ও যে শ্রেয়ানের জন্ন নাম্বার লিখে গিয়েছিলো ওটা সেভ করে রেখেছিলাম । ওকে দেখা করতে বললাম । অনিকেত বলল আজ ওর আশা সম্ভব না । ঠিক হল কাল আটটা থেকে নটা এর মধ্যে ও আমার বাড়ি আসবে। অনিকেতের সাথে কথা বলে এবার বেতালদাকে ফন করলাম । একই সময় বেতালদা কেও আসতে বললাম । বেতালদা আসবে বলে কথা দিলেন ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।