কাব্যক্রমে দেবানন্দ দে
by
·
Published
· Updated
১| শোকে তাপে জন্ম নেয় মানব শরীর
মানবিক মুখগুলো দূরে সরে যায় ছায়ার মতোন
বড় শোকে-তাপে জন্ম নেয় মানুষ শরীর,
কম্বলহীন শীতে কাঁপে শিশুর নগ্ন শরীর
মায়ের বুকের তাপে ওম পায়
আগামী পৃথিবীর মালিক।
এই আমার জন্মভূমি সুজলা – সুফলা
ঘন নীলে ভরে থাকে আকাশ
শালিকের চোখে ভোর হয়
টুপ টুপ শিশিরে, সাদা – লাল ফুলে।
এই আমার জন্মভূমি – মায়ের আঁচলে
ভাঙ্গা বারান্দায় সহোদর ভাই- বোনে
খুনসুটি খেলে, ধান ভাঙ্গা ঢেকির শব্দে।
হলুদ ফুলের দুপুরে – মায়েদের বারমাস্যা
গান হয়ে নদীর বাঁকে ভেসে যায়
বোনের প্রেম চুরি হয় চুপিসারে
বাবার প্রতিকী চিহ্ন আগাগোড়া
মায়ের ছায়ার সাথে মিশে থাকে।
আমি মুখ খুঁজি বারবার – এই দেশে, সেই দেশে
দেখি এক বিশ্ব একই মানবতার ভিড়ে।
২| প্রেম নহন্যতে
তারে আমি দেখিয়াছি মেঘালয়ে
মেঘ আর বাদলের গভীর অবয়বে,
উদ্ভাসিত দুই চোখে ঘন শ্যামলিকা
ডাকিয়াছে আমারে, নাম তার ভাসিয়াছে
বাতাসের কানে কানে ‘ শোন রীতা’।
মনিপুরে রাজবাড়ি দেখিয়াছি –
মৃদঙ্গ বেজেছে সেথায়
চিত্রাঙ্গদার কোমর জড়িয়ে,
তারে আমি দেখিয়াছি ঘুঙুরের পায়ে,
সুরমার আঁখি দুটি জেগে থাকে বেহাগের সুরে
চারিদিকে ফিসফিস, কথা বলা মানা
তবু তারে ডাকি আমি নিবিড় সান্নিধ্যে-‘শোন রীতা’।
মুখ তার রবীন্দ্র নৃত্যে আঁকা প্রেম সোহাগিনী
চোখ তার যামিনীর পটে আঁকা নবাব নন্দিনী,
ঠোঁট তার রক্ত চন্দনের সুগভীর সুঘ্রাণে
নাসিকায় হীরা দ্যুতি আছাড় খেয়েছে।
তারে আমি বাহুবলে ধরিয়া দেখেছি
শাপলার মতো তার কোমল শরীরে,
ঘন শ্বাসে যামিনী ঢেকেছে মেঘে
তবু সে তো ফুলদানি সাজিয়েছে
খোঁপা খুলে দিয়ে।