সারাদিন কাটে সময় নিয়মে। আজ অন্ধকারের বিরুদ্ধে ক্রমশ সোচ্চারে। হে আঁধার তুমি মুক্ত হও। আলো থাক।
ধুর তাই হয় নাকি? এ জাগতিক নিয়ম। এই নিয়মে আজও ভয় হয় যদি সকাল না আসে? আশায় মেনে নিতে হয় আর স্বপ্নের পাখিরা দোল খায়। দেখতে থাকি প্রতিরাত আর আজ …
এই ঘর আমার সংসার। কত মানুষ প্রতিদিন। কাটাছেঁড়া। আমি ঘুম দিচ্ছি দরজার নিচে। ঝুলছে তালা। ঝুলুক। এখন মানুষ আসে না। আসবেই বা কেন তারা তো পলিপ্যাকে স্বর্গসুখে। সময়টা দেখবো আর বেঁচে থাকবো। আমার প্রাত্যহিক নিয়ম তালা খুলে ঝাড়পোঁছ। শুনতে পায় তাদের কান্না। বেঁচে থাকার আর্তি। শরীর কাটা আর খন্ডে খন্ডে জুড়ে দেওয়া। কত যত্ন। সব শেষ লাশকাটা টেবিলে। তাদের শরীরের প্রতি আমার নজর থাকে না। কারণ আমি দেখি চাওয়া নাপাওয়ার গুপ্ত খনি। লুকিয়ে রাখা বেদনা অসীম সাহসে আর নির্মম আঘাতে। কন্যাসম সুন্দরী তরুণীকে দেখে আমার ছুরিহাত কেঁপে উঠেছিল একদিন । বিধাতার কি নির্মম পরিহাস। উপায় নেই, আমি যে লাশকাটা মানুষ। প্রেমের আত্মহত্যা। মৃত্যুমুখগুলি চেনা যায় খুনি, ধাপ্পাবাজ,আর ছিনিয়ে নেওয়া মানুষদের। হয়তো আমি তাদের গালমন্দে। কি করবো? এ কাজ যে আমার রুজির। বাড়িতে নেই নেই করে পাঁচজন ভরসায়। থাক তালা বন্ধ। কমুক ছুরির ধার। টেবিল শুন্যতায় ভুগুক।
যদি
হাত অক্ষম হয়? থরথর কাঁপে? শিরায় টান ধরে? আমার রোজগার বন্ধ হয়ে যায়?
অভ্যাস নষ্টে বাঁচতে হবে আমায়। এসময় আর আগামী দিনগুলো কাজ হারানোর দিন।
এখন
ছুরি পকেটে। চললাম এক উদেশ্যহীন অভ্যাসে। ছুটছি লাশের আশায়। পেয়েছি যমুনাতটে। মাছি ভনভন । পচন ধরেছে। পকেটছুরি বার করে লাশ উল্টে দেখি এ তো আমার না পাওয়ার সেই প্রিয়জন। চেয়েছিলাম সেই কবে। আমি আছড়ে পড়ি তার উপর। এই সময়কে আমি ভয় পায় না কারণ পাওয়ার আনন্দবন্ধনে এখন।
সময়ে
আমি মৃত ছুঁয়েছি বলে আমাকে কে যেন ঢুকিয়ে দিচ্ছে পলিপ্যাকে।
আমার নিঃশব্দ চিৎকার – আমাকে ছাড়ো আমি লাশকাটা ঘরে যেতে চাই।