• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে মৌসুমী নন্দী (যাপন চিত্র – ২২)

যাপনচিত্র – ২২

যো ডর গ্যায়া ও মর গ্যায়া

তখন কোভিডের প্রথম ওয়েভ. বন্ধু, দাদা, দিদিদের সাথে মাঠে মাটি কামড়ে লড়াই করছি. লকডাউন পরিস্থিতিতে বেসামাল হয়ে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিক পরিবার থেকে শুরু করে অসুস্থ, জীবিকা হারিয়ে বসা সহনাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে সহযোগিতা চাইছি, অল্প সামর্থে নিজেদের মতো করে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি.হঠাৎ আবহাওয়া জনিত কারণে বাড়ির সবার জ্বর, খুচরো কাশি. ভয় করবো না ভেবেও ভয় হচ্ছে বাড়ীতে ছোটো বাচ্চা আছে তাই বাড়ছে. বিপি মাপলাম. কিছু ফলস বিট দিচ্ছে. ঘাবড়ে গেলাম. কাছেপিঠে বিপি মেশিন আছে, মাপতে পারেন এমন খুব পরিচিত একজনকে অনুরোধ করলাম তাঁর বিপি মেশিনটি দিয়ে যদি একটু মেপে দেন. লাইন পেরিয়ে খুব সহজে ডাক্তার দেখাতে পারছি না. তিনি জ্বর শুনে ভয় পেলেন. এরপর অনুরোধ করলাম অন্তত বিপি মেশিনটা যদি… তাতেও রাজি করাতে পারলাম না. তখন লোকমুখে ছড়িয়েছে ভাইরাস লোহায় বেঁচে থাকে এতদিন, স্টিলে এতদিন, এতে ওতে এতো অতো দিন. শেষে সবটা মানিয়ে নিয়েছিলাম. অল্প কিছুদিন পর পুরোপুরি সেরেও উঠলাম. এ ঘটনার মাস দশেক হবে. এবার ওয়েভ টু. ঘটনা ঠিক বিপরীত. যাঁর কাছে বিপি মেশিন চেয়েছিলাম, তিনি তার পরিবার সমেত জ্বরে ভুগছেন. আমাদের অবস্থান? আমি ও আমরা যতটা সম্ভব তাঁদের পাশে আছি প্রয়োজনে প্রায় দিনরাত না মেনে ৷তবে এটা নিয়ে নিজেদের মহানুভবতা প্রকাশ বা আত্মপ্রচারের করার জন্য বলছি না বা লিখছি না বা এটা কোনো বিরাট কোনো ঘটনা নয়. এমন কি এই সিরিজে পর্ব বাড়াতে হবে বা আপনার মূল্যবান সময়কে ব্যক্তিগত গল্প শুনিয়ে নষ্ট করতে হবে এই প্রয়াসেও না , এমনটা খুব স্বাভাবিক ও সাধারণ আমার আপনার আমাদের অনেকের জীবনে. কিন্তু খুব সূক্ষ্ম ভাবে দেখলে, এতে কোনো ‘পাল্টা’ নেই.
আমাদের সামাজিক জীবন যদি স্বতঃস্ফূর্ত একটু ভয় কাটিয়ে এগিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং বেঁধে বেঁধে থাকি তাহলে হয়তো কমে যেত সামাজিক , অবক্ষয়ের ছেদচিহ্ন ৷ অন্ততঃ সহজে দেখা যেত. মানুষের মনে জোর বাড়তো
আসুন না, ক্ষোভ অভিমান দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা দ্বেষ সহ সমস্ত নেগেটিভ এনার্জি উৎপাদনকারী শব্দগুলোকে প্রতিফলকের থেকে দূরে সরিয়ে রাখি. কারণ বর্তমানে আবার
আবার_ব্ল্যাক_ফাঙ্গাস_বলে_নতুন_আর_একটা_রোগ_আসছে।
শুনেই তো আমাদের সকলের যে কি যবু-থবু অবস্থা…সে আর কি বলবো!!! কিন্তু রোগটা আসলে কি??কেন হয়?? কাদের হতে পারে?? কতটা ভয়াবহ ?? সে বিষয়ে কিন্তু ম্যাক্সিমাম অজ্ঞাত। কিন্তু স্যোসাল মিডিয়াতে ,হোয়াটসআ্যাপে ঘুরছে নানারকম মেসেজ না রকম ভিভিডিও যেটা মানুষকে এই মুহূর্তে আরো ভীত হয়ে উঠছে এবং মনোবলকে ভেঙে দিচ্ছে ৷ তাই
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি আর কিভাবে হয়।
রোগটার নাম আদোও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নয়। সংবাদ চ্যানেল গুলো টি আর পি বাড়ানোর জন্য ভয় দেখিয়ে বেশি বেশি করে নামটা প্রচার করছে।কিছু কিছু ডাক্তার দেখছি কথাটা ব্যবহার করছেন। কিন্তু কেনো জানিনা। হয়তো প্রচারে আসার জন্য করছেন।আসলে ব্ল্যাক নামটা শুনলেই যেনো কেমন একটা লাগে,মনে একটু নেগেটিভিটি কাজ করে। তাহলে রোগটার অরিজিনাল নাম কি???
রোগটার প্রকৃত নাম হল ‘মিউকরমাইকোসিস’।রাইজোপাস, মিউকর ও আপসিডিয়া- এই তিন ধরনের ছত্রাক যেগুলো পাউরুটির উপর জন্মায়,এরাই রোগটার জন্য দায়ী। এই ছত্রাক লাখ লাখ আমাদের আসে-পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তাতে কি হয়েছে ??? তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মত ক্ষমতা আমাদের শরীরে আছে। আমাদের শরীরে ঢুকলেও আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার তাদের বিরুদ্ধে জিতে যাবে। তাহলে রোগটা কাদের হতে পারে??? উত্তর হচ্ছে–যাদের আন-কন্ট্রোলড সুগার আছে ,যারা অতিরিক্ত স্টেরয়েড নেয় কিংবা যাদের শরীরে অন্য কোনও রোগের কারণে ইমিউনিটি একদম কমে গেছে তাদের রোগটা হতে পারে।
রোগটা সবার হয় না।
নর্মাল লোকেদের হয় না।
এটা ছড়ায় না।
তাহলে এত ভয় পাচ্ছেন কেনো???
শুধু শুধু গুজবে কান দেবেন না।
ভয় পাবেন না।
আবার বলছি—–রোগটা ছড়ায় না,নর্মাল লোকেদের হয় না।
পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন।
কোভিড হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছামত স্টেরয়েড নেবেন না। যারা জিম করছেন ,হটাৎ করে রোগা-প্যাটকা চেহারা থেকে বডি বানানোর জন্য স্টেরয়েড নেবেন না।একই মাস্ক বার বার ব্যবহার করবেন না।একবার ব্যবহার করার পর সাবান জল দিয়ে পরিস্কার করুন, তা নাহলে ইউজ এ্যন্ড থ্রো সার্জিক্যাল মাস্ক পরুন।
কিচ্ছু হবে না। আমরা সবাই ভালো থাকবো।
মনে রাখবেন গব্বর সিং ঠিকই বলেছিলেন,
“যো ডর গয়া সমঝো ও মর গয়া”
সাবধানে থাকুন……. সুরক্ষিত থাকুন৷
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।