• Uncategorized
  • 0

ধারাবাহিক ভূতুড়ে গল্পে আরিফা খাতুন (পর্ব – ৪)

অদৃশ্য ফোন কল

রাহুল আর অমিত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপছে , হঠাৎ মিম তাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখে, না মিমকে ওরা দেখতে পায়নি কিন্তু একটা তীক্ষ্ণ আলোর প্রভা তাদের চোখে এসে পড়ে, তারপর আর কিছু মনে নেই জ্ঞান হারায় দুজনে । ও দিকে বিজয় মিমকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে চাইলে মিম মানা করে । মিম এত রাতে কি করে একা আসলো কি ভাবে বা একা যাবে বিজয় সেটাই ভাবতে থাকে , বিজয়: “এই মিম, তোমার বাড়িটা কত দূর একা যাবে কি করে আমি দিয়ে আসি না ।” “না না আমি ঠিক চলে যাবো , বিজয় তোমার জেদ কেন এমন ?” কথা শেষে বিজয় চলে যায় কিন্তু বিজয়ের মনে হাজারও প্রশ্ন থেকে গেল , যাবার সময় বিজয় একটা কথা বলে গেল পরের বার দিনে দেখা করবো। বিজয় সকালে উঠে বন্ধুদের দেখতে পেল না সবাই গেল কোথায় , এত সকালে কলেজ চলে গেল না তো । বিজয় তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে কলেজে যায়, সেখানে ও কাউকে দেখতে পেলো না বন্ধুদের ।

হস্টেলের এক ছেলে তুষার, পার্কের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে দেখে দুজন পড়ে আছে সে হস্টেলে বন্ধুদের ডাকে , সবাই মিলে তাঁদের চোখে মুখে জল দেয় অনেক ডাকাডাকির পর রাহুল অমিত চোখ খুলে দেখে তারা পার্কের পাশে মাটিতে পড়ে আছে । হস্টেলে ফিরে তারা সব কথা বলে, বিজয় এত রাতে পার্কে গিয়ে কার সাথে কথা বলছে কেউ তো ছিল না ? দু এক জন বলে উঠলো দেখ দেখ ওর ভূতে ধরে নি তো , কেউ বলল দূর ওর মাথা খারাপ আছে । চারিদিকে এই নিয়ে চর্চা শুরু হল , হস্টেল সুপারের কানে গেলো কথাটা , হোস্টেলের একটা নিয়ম আছে রাত আটটার পর কেউ বাইরে যেতে পারে না । বিজয় সেখানে ১২টার সময় বের হল কি করে ? বিজয় কলেজ থেকে ফিরলে সব বন্ধুরা ওকে নিয়ে খারাপ কথা বলতে থাকে , হস্টেল সুপার ও ওকে ডেকে বকাবকি করে । বিজয় রুমে এসে রাহুলকে জিজ্ঞাসা করে তার রাতে বাইরে যাওয়ার ঘটনা সুপার কি করে জানলো?

রাহুল – তুই সুপার কে জিজ্ঞাসা কর , একটা কথা বলতো , কাল রাতে তুই কার সাথে কথা বলছিলিস?
বিজয় – ও এই ব্যাপার, আমার এক বান্ধবী মিম ,তোরা জানিসনা আমরা এক স্কুলে পড়াশুনা করেছি এত দিন পর আবার দেখা হল।
রাহুল- তোর সাথে তো কাউকে দেখিনি ?
বিজয় -তোরা গিয়েছিলি ?দেখতে পাসনি কিছু? রাহুল – না , শুধু তোকে দেখেছি বক বক করতে । বিজয় – তোরা আমার বন্ধু ,জানি না কেন আমার সাথে খারাপ আচরন করছিস । মিম ছিলো আমার সাথে তাও বলছিস দেখতে পাসনি , কেউ আমাকে পাগল বলছে কেউ বলছে ভূতে ধরেছে, এই আমার বন্ধু তোরা?
রাহুল – আমরা যেটা দেখেছি সেটাই বলছি । ঠিক আছে তুই কাল যার সাথে দেখা করেছিস তার ছবি দেখাতে পারবি । বিজয় – আচ্ছা মিম আজ আমাকে কল করলে তোদের দু- জন কে ছবি পাঠিয়ে দেবো দেখে ডিলিট করে দিস। রাতে কল এলো , বিজয় – মিম তোমার একটা ছবি দেবে গো, আর তোমার নম্বরও তো নেই ওটাও পাঠিও আমার কাছে । মিম – আমার নম্বর দেখতে পাবে না কিন্তু আমার ছবি তোমার কাছে চলে যাবে। রাত তখন ১২টা ৩০ হবে বিজয়ের ফোনে টুং , টুং শব্দে বেজে উঠে মিম বিজয় কে তার ছবি পাঠিয়েছে ।
বিজয় ফোটোটা সেভ করে রাহুল আর অমিতকে পাঠিয়ে দেয় তাঁদের ফোনে ও এসএমএস গেল রাহুল ,অমিত তখন জেগে ছিল । বিজয় – দেখ তোদের কাছে মিম এর ছবি পাঠালাম আজ অনেক রাত হলো কাল সকালে কথা হবে। এই বলে বিজয় শুয়ে পড়লো। অমিত আর রাহুল দেখার আগ্রহ ছাড়তে পারলো না। ম্যাসেজটা খুললো সঙ্গে সঙ্গে একটা নীল চোখের তীক্ষ্ণ আলো বের হয়ে এলো, ফোনের ভেতর দিয়ে কোন লম্বা হাত বের হয়ে ওদের দুজনের গলা চেপে ধরলো , কেউ নিঃশ্বাস নিতে পারছে না , কাউকে ডাকতে ও পারছে না । তাদের চোখে অন্ধকার নেমে এসেছে , কিছু আর দেখতে পারছে না সমস্ত শরীর শীতল হয়ে এলো ।

চলবে

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।