T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় শর্মিষ্ঠা দত্ত
by
·
Published
· Updated
তোমার সুরের ধারা
রবীন্দ্রসদন থেকে বেরিয়ে গেটের কাছেই একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেল সুচরিতা l
-লেকটাউন যাবেন?
-উল্টোডাঙা যাব l উঠুন l
একটু আগেই তুমুল ঝড়বৃষ্টি হয়ে গেছে l এসময় যা হয় ! অ্যাপ ক্যাবের রেট অস্বাভাবিক বেশি, মেট্রোও বন্ধ l ধুত্তোর ! যা থাকে কপালে l যেভাবেই হোক বাড়ি ফিরতেই হবে l তিন্নি বাড়িতে একা l দেবরূপকে আজই হঠাৎ একটা কনফারেন্সে গৌহাটি যেতে হল l
কবিপক্ষের অনুষ্ঠান চলছে l আজ ওর গান ছিল সদন মঞ্চে l তিন্নিকে বারবার প্রোগ্রামে আসতে বলেছিল কিন্তু তার এ ব্যাপারে কোনো ইন্টারেস্ট নেই l গানের ধারপাশ দিয়েও সে যায় না l
-গাইবে তো মোটে দুটো গান, এমন প্রোগ্রামে না গেলেই হয় !
দেবরূপের গলায় তাচ্ছিল্য স্পষ্ট l
অদ্ভুত ! ওর কমিটমেন্টের কোনো দাম নেই নাকি !
ট্যাক্সির ভিতরে একটা তিন্নির বয়েসী মেয়ে বসেছিল l
-দাদা শেয়ারে কত পড়বে?
-ম্যাডাম আপনার গান শুনলাম l অপূর্ব ! মেয়েকে নিয়ে রোজ অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলাম l এখন বাড়ি যাচ্ছি l আপনাকে একটা লিফ্ট দিতে পারলে আমার খুব ভালো লাগবে l
-তোমার নাম কি?
-নবনীতা…
-বাহ্ খুব সুন্দর নাম l গান শেখো ?
-না ম্যাডাম…ওর শেখার খুব ইচ্ছে কিন্তু আমারই অক্ষমতা l
নবনীতার বাবা উত্তর দিলেন l
-আমি শেখাব ওকে l ফীস লাগবে না l
হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে উঠল মেয়েটার মুখে l
বছরপাঁচেক পর একটা বিখ্যাত টিভি চ্যানেলে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম নবনীতা রায় পুরস্কারটি উৎসর্গ করল তার গুরুমা সুচরিতা সেনগুপ্তকে l শিষ্যার ডাকে দর্শকাসন থেকে মঞ্চে উঠে ঘোষকের অনুরোধে সুচরিতা গেয়ে উঠল,
“আমার নীরব বেলা সেই তোমারই সুরে সুরে
ফুলের ভিতর মধুর মত উঠবে পুরে… “