T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায়
by
·
Published
· Updated
আমি ও রবীন্দ্রনাথ
বৃষ্টি আসবে বুঝতে পারিনি। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে ভিজতে হল। বাথরুম থেকে বেরিয়ে বুঝলাম ঠান্ডা লেগেছে। রাতে শুতে যাওয়ার সময় টের পেলাম একটু মৃদু কাঁপুনি।
এ কোন অচেনা জায়গায় চলে এসেছি আমি! চারিদিকে অন্ধকার। আজকাল মনের ভিতরে সবসময় ভয়। যা হয় হবে, বলে উড়িয়ে দিতে পারছি না। এক অদেখা শত্রু। কখন কিভাবে হানা দেবে কে জানে। প্রতিদিনই খারাপ খবর শুনি। কত বন্ধু ও পরিচিতজনকে আর কোনোদিনই দেখতে পাব না।
কত মানুষ মৃত। চিকিৎসা,ভ্যাকসিন ও অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। এইসব দেখে কেমন অসহায় লাগে।
দেখলাম অন্ধকার ভেদ আমার দিকে এগিয়ে আসছে রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গে ভগিনী নিবেদিতা ও অবনীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথ হাসলেন। বললেন, ‘সৌ্রভ তুমি এখন আছ ১৯১১ সালের কলকাতায়। এখানে খুব বিপদ। প্লেগ রোগে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। একটা প্লেগের হাসপাতাল তৈরি করব ঠিক করেছি আমরা। তুমিও এসো। এইসময় অনেক মানুষকে দরকার।’
যে রবীন্দ্রনাথকে কবিতা,গান ও নানা লেখার মাধ্যমে আমার হৃদয়ের মাঝে রেখে আমি ধন্য, তিনি আমাকে ডাকলে না বলব কী করে। মনে হল আমি কি তাহলে নেই!
ভাবনাটা মাথার ভিতরে ছড়িয়ে যেতেই ভয় পেলাম। ঘেমে উঠেছি। এভাবে তো চলে যেতে চাইনি। কত কাজ আছে আমার। আমি চলে গেলে ওদের কি হবে? যারা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে আমাকে সুস্থ রাখার জন্য।
হাত বাড়ালেন রবীন্দ্রনাথ। ‘কই এসো।’
তখনই ঘুম ভাঙল। জানালা দিয়ে একটা রোদ ঝলমলে আকাশ দেখতে পেলাম।