• Uncategorized
  • 0

T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় বিদিশা ব্যানার্জি

আমি ও রবীন্দ্রনাথ

কিছুতেই আর লেখা বেরয় না। কি হল?
সোনালিদিকে এদিকে তো বলে দিয়েছি যে লেখা দেব, ওদিকে হাত দিয়ে কিছু বেরোছেই না।
তাও কি নিয়ে লেখা ? না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে লেখা!!!
বাঙালি নাকি শয়নে-স্বপনে-জাগরনে যে কোন পোসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে গরগরিয়ে বলে এবং লিখে যেতে পারে। আর সোনালিদি লোক পেলেন না!!! শেষে আমাকে!
একে তো আমি সেরকম ভক্ত নই, তায় শেষ কবে ওনার লেখা পরেছি মনে করতে পারছি না। কি আপদ!!!
দেখুন মশাই, আমি অই অভিশপ্ত নাইটির লাবণী সরকারের মত মনে করি না যে উনি আমার গুরুদেব, আমার মন, আত্মা সব ওনার পায়ে সঁপে দিলেই মোক্ষ লাভ। নাহ, আমি ওনাকে আর পাঁচটা সাধারন মানুষের মতই ভাবি। তাই আজকে একজন নন-ভক্তর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমি লিখতে বসলাম। হতেই পারে আপনাদের সাথে আমার দৃষ্টিভঙ্গি মিলল না। নিজগুণে ক্ষমাঘেন্না করে নেবেন।
তাহলে দাঁড়াল কি?
কেন ভাই? এত গুরুদেব-গুরুদেব করে লাফানোর কি আছে ? কি আছে একটু মনে করতে বসলাম।
দেখলাম গুটিগুটি পায়ে এসে আমার বিবেক ওবেরয় ও এসে বসল আমার পাশে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বিবেকবাবু সচরাচর দেখা দেন না। শুরু হল নরম নরম করে ভাবভালবাসা।
বিবেকঃ-এই যে আজকে এত বারফাট্টাই মারছ, বিদিশা, কোথায় থাকত তোমার এত পাকামো যদি না তুমি বাংলা ভাষাটা না জানতে? ভুলে গেছ সহজপাঠ? ওই দেড়েল বুড়োটারই লেখা।
বিদিশাঃ- তাইতো!!! এটা তো ভেবে দেখিনি!
বিবেকঃ- তা কেন ভাববে? তুমি নাকি আবার বাতেল্লা মারো যে বাবা মেয়ের সম্পর্ক হল সব থেকে পবিত্র? ওই লোকটা কিন্তু সব কিছু ছেড়ে নিজের অসুস্থ মেয়ের পাশে গিয়ে বস থাকতো, ভুলে গেলে বেলার কথা?
বিদিশাঃ- হুম, কিন্তু মেয়েটার যে বাচ্ছাবেলায় বিয়ে দিয়ে দিল তার বেলা?
বিবেকঃ- আরে তুইই তো বলিস যে মানুষ, ভগবান নয়!!!
(দেখলেন তো? তুইতোকারিতে নেমে গেল!!)
বিবেকঃ- আচ্ছা সত্যি করে ভেবে বল তো, তুই তো এত বাংলা লেখা পড়িস,এত ভালভাবে মেয়েদের কথা ক জন বলেছে? কে এই ভাবে অনুভব করেছে ? মেয়েরা যে কত একা সেটা আর কেউ এভাবে লিখে গেছে? তাও এতদিন আগে?
বিদিশাঃ- কিন্তু………শরত………
বিবেকঃ- কিন্তু ফিন্তু নয়, তুই কি ভাবছিস আমি জানি না? নাকি বুঝি না?
তুই যতই ওইসব ছাইপাঁশ মেটালিকা বা এনরিকে শুনিস, কণিকার গাওয়া বাজে করুণও সুরে তোর সব থেকে পছন্দের গান?
আরে বাবা স্বীকার কর লোকটার এলেম ছিল, যেটাতে হাত দিয়েছে, সেটাতেই একটা লেভেলে চলে গেছে। তায় নাকি কোন পড়াশোনা শেষ করেনি!!!
বিদিশাঃ- সে জমিদারবাড়ির ছেলে ছিল, চিন্তাভাবনা কিছু ছিল না…………
বিবেকঃ- হ্যাঁ রে শালা তাই তো শান্তিনিকেতনটা বানাতে গিয়ে বউয়ের সব গয়না বেচে দিতে হল!!!
ভুলে যাস না, গোটাটাই দানের জমিতে বানানো। আর খালি চিন্তাভাবনাটা একবারের জন্য ভেবে দেখ বাচ্ছাদের জন্য এভাবে আর কে ভেবেছে?
বিদিশাঃ- ও হ্যাঁ বউকে যে অবহেলা করলো তার বেলা?
বিবেকঃ- আর তোর দস্তয়ভস্কি যেন বউকে আসনে বসিয়ে পূজো করত রে!!! ছেড়ে পালিয়ে গেছিল রে। দেখ তুই কেমন ছাগল, একদিকে তুইই বলছিস যে লোকটা মানুষ, আর পাঁচজনের মতই, তাহলে অন্যদিকে মানুষ যে ভুল করে, দোষগুণ থাকে সেটাও মাথায় রাখ।
বিদিশাঃ- খামখা আমাকে গালি দিবি না বলে দিচ্ছি কিন্তু। আর তুই শালা ভুলে যাচ্ছিস যে ওই দেড়েল বুড়ো বিবেকানন্দকে ভাল ভাবে নিতে পারে নি।
বিবেকঃ- ছাতার মাথা, ওই বুড়োটাই বলে গেছে রে যে ভারতকে জানতে হলে বিবেকানন্দকে পড়ো, ওর সবটাই ভালো!!!
লোকটা জানত কার কাছে মাথা নত করতে হয়। তোদের এখনকার লেখকদের মত নয়, দু লাইন লিখেই মাটিতে আর পা পড়ে না!!! যাকগে ছাড় তোকে ছাগল কি সাধে বলি? আমার প্রচুর সময় নষ্ট করে দিলি।
অফিসের অতনু দা এসে ডেকে দিল, দিদি, বাড়ি যাবেন না? কি এত ভাবছেন?
হুঁ? বাড়ি? যাব, কি ভাবছি? যদি জানতেম…………………………………………
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।