T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় তপশ্রী পাল
by
·
Published
· Updated
প্রাণের মানুষ
“বেরেকপাস্ট হয়ে গেছে বৌদিমনি। গরমাগরম খেয়ে নাও দিকি”।
পুতুলের হাঁকডাকে তিথি কিচেনে এসে ঢুকতেই পুতুল একটু লজ্জা লজ্জা করে হেসে তার পরবর্তী দাবী টাও জানিয়ে দিল- ” আমারে কিন্তুক এই পুজায় অসোগোল্লা শাড়ী দিও বৌদিমনি। ইবারে উটাই স্টাইল উটেচে গো”। তিথি হেসে ফেললো। ‘র’ দিয়ে যে সব শব্দ শুরু হয় সেগুলো পুতুল ‘অ’ দিয়ে শুরু করে। অসগোল্লা মানে রসগোল্লা অর্থাত গোল গোল প্রিন্টের শাড়ী। এবার তিথির দরবারে পুতুলের তৃতীয় দফা দাবী- ” আর আজ কিন্তুক ওবলা আসতে পারবুনি গো, পাড়ায় ওই ঠাকুরের পুজা আছে গো। পান্ডেল বাঁধছে সব,গান আরবিতি করবে সব ছেলে মেয়েগুলান। আমিও গাইব গো। শিখায় দিছে পাড়ার ইস্কুলের দিদিমনি। ওই যে গো… পঁচিশে বৈশাখ হে নূতন…… ”
তিথি চমৎকৃত হল। রবি ঠাকুরের জন্মদিন! ঠাকুরের পুজোই বটে! পুতুলরা করবে! প্রাণের ভেতর কোথায় যেন সত্যিই আনন্দ সাগরের বান এসে তোলপাড় করল।
তিথি বললো “জানিস রবি ঠাকুর কে?”
“হেঁ, অবি ঠাকুর ছড়া গানের ঠাকুর!”
“তাঁর ছড়া বুঝিস তোরা?”
“বুঝবুনি? পান্তবুড়ির দিদিশাউড়ির তিনবোন থাকে কালনায়। শাড়িগুনো তারা উনুনে শুকোয় হাড়িগুনো রাকে আলনায়! দিদিমুণি শিখায়েচে!” কত সহজ ভাবে কবিকে বুঝেছে ওরা, ভাবে তিথি।
বিকেলে ওদের প্রোগ্রাম দেখতে গেলো। ঢোলা ফ্রকের ওপর শাড়ি পরে আনন্দে নাচছে মেয়েগুলো আর পুতুলের মতো অনেকে মিলে গাইছে “আমরা সবাই আজা আমাদের এই আজার আজত্বে” সব অভাব ভুলিয়ে আনন্দের রসদ যোগান যিনি, তিনিই তো প্রাণের মানুষ। তাঁর ছড়া আর গানকে তিথি যেন নতুন ভাবে চিনলো আজ।