সঞ্জয় মহারাজকে বললেন যে অর্জুন যখন যুদ্ধ করব না বলে স্থির করলেন, তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাঁকে হাসতে হাসতে বললেন যে যাদের জন্য শোক করা উচিত নয়, তাঁদের জন্য তিনি শোক প্রকাশ করছেন, অথচ জ্ঞানীদের মত কথা বলছেন। প্রকৃত জ্ঞানীরা কারোর জন্য হাসি বা কান্নাকে প্রশয় দেন না।
ভগবান আরও বললেন যে তিনি যে পূর্বে ছিলেন না, এমন নয়। অর্জুনও যে ছিলেন না, তেমন ও নয়। এই সকল রাজা এবং মহারথীরাও যে ছিলেন না, তেমনও নয়। এবং আগামী সময় যে থাকবেন না, একথাও স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
পার্থিব এই শরীরে বাল্য, যৌবন এবং বার্ধক্যের বাস। মৃত্যুর পর এই আত্মা এক দেহ থেকে অন্য দেহে প্রবেশ করে। জ্ঞানী ব্যক্তিরা এই সকল ব্যাপারে কখনও শোক প্রকাশ করেন না।
শ্রী কৃষ্ণ অর্জুনকে আরও বললেন যে ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বস্তুর যোগাযোগ হলেই, না না উপলব্ধির জন্ম হয়। এই সকল উপলব্ধি অস্থায়ী। কিন্তু এদের সহ্য করা ছাড়া, ভিন্ন উপায় নেই। যে ব্যক্তি এই সকল উপলব্ধিকে একই ভাবে দেখেন, তিনি মোক্ষ প্রাপ্তির অধিকারী হন।
যে বস্তু অনিত্য, তার অস্তিত্ব নেই। যে বস্তু নিত্য, তার অস্তিত্ব রয়েছে। জ্ঞানী এবং পন্ডিত ব্যক্তিরা এদের প্রকৃত রূপ জানতে সক্ষম হয়েছেন। আত্মা নিত্য, অবিনশ্বর। এই ভুবনে এমন কোন শক্তি নেই যে এই আত্মাকে বিনষ্ট করতে পারে। এই আত্মতার এক রূপ। বিভিন্ন দেহে তার বসবাস। এই দেহ নশ্বর, আত্মা অবিনশ্বর। তাই , “হে পৃথাপুত্র অর্জুন, যুদ্ধ কর”।