পূজোর সাফসাফাই শুরু। অনিন্দিতার চোখ আটকে যায় ধুলোর আস্তরণে ডুবে থাকা দেয়ালের কোনে টাঙিয়ে রাখা রাখীটাতে। সনটাও মনে পড়ছে না এখন। রাখীর দিনে ওরা দল বেধে বেড়িয়েছিল রাখী পড়াতে। কলেজের গেটের উল্টোদিকে কতগুলো ছেলের সাথে অনির্বাণও দাঁড়িয়ে ছিল। ওরা সকলের হাতে রাখী পড়িয়ে দিচ্ছিল। অনির্বানের হাতে ও বাঁধলো রাখীটা। সেখানে শেষ করে কলেজের দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। খেয়াল করেনি, একটা দানব তেড়ে আসছে ওর দিকে। একটা আচমকা ধাক্কা ওকে সরিয়ে দিল দানবটার মুখের সামনে থেকে, ছিটকে পড়ল খোলা রাস্তার বুকে, হাতের রাখীগুলো ছড়িয়ে গেল চারদিকে,সম্বিত ফিরতেই দেখল, প্রায় পনের ফিট দূরে রাস্তার পাশে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে অনির্বাণ, রক্তস্নাত। কীসের জোরে যে ও উঠে দৌড়ে পৌঁছে গেল সেখানে,তা আজও বোঝেনি। স্তব্ধ, নির্বাক, স্পন্দনহীন ছেলেটার মাথাটা যত্নে তুলে নিল নিজের কোলে, সদ্যপ্রাপ্ত বোনের পড়ানো রাখীর ঋণ শোধ হল এইমাত্র! ভেজা চোখের কোল নিয়ে পরম মমতায় দেওয়ালে ঝোলানো রাখীটা নিজের আঁচল দিয়ে পুঁছতে শুরু করে অনিন্দিতা।