|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় আকাশ কর্মকার

নববর্ষ
একটা লংড্রাইভ! দুর্ঘটনার ভয়বহতা, স্ত্রীয়ের আকস্মিকভাবে চলে যাওয়ার ধাক্কা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেন নি রথীনবাবু। দীর্ঘ পাঁচবছর ধরে তিনি চিকিৎসাধীন, সার্জারির অজস্র দাগ মিলিয়ে যেতে শুরু করলেও মানসিক রোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সেই দুর্ঘটনার আতঙ্ক, মৃত স্ত্রীয়ের রক্তাক্ত শরীর রীতিমতো ওনাকে Dystychiphobia এর দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছিল। যদিও এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ; এরপর রথীনবাবুর ঔষধের পাশাপাশি স্নেহের পরশের বেশী প্রয়োজন।
মা মারা যাওয়ার সময় তিন্বীর বয়স ছিল মাত্র তেরো; এমনিতেও হোস্টেল থেকে বারবার আসাও সম্ভব ছিল না তার পক্ষে। এই তো মার্চের সাতাশে সেও সাবালিকা হয়ে উঠেছে, এখন তার কাঁধ যথেষ্ট উপযুক্ত হয়ে উঠেছে বাবাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলার জন্য।
আজ নববর্ষ, আরেকটা নতুন বছর পা রাখল। ঘড়িতে তখন সকাল এগারোটা, তিন্বীকে সঙ্গে নিয়ে তার মামা এলেন হাসপাতালে। রথীনবাবুর বাড়ি যাওয়ার সময় হয়ে এলো যে মেয়ের হাত ধরে। মেয়েরা বাবাদের কাছে মেয়ে কম, মা বেশী হয়ে থাকে সবসময়। এতদিনের অভিশপ্ত সময় পার করে এই পয়লা বৈশাখ আদতেই বাবা ও মেয়ের জীবনকে আবার নতুন করে সাজিয়ে তোলার পথ দেখাচ্ছে।