|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় শ্রাবণী সেনগুপ্ত
by
·
Published
· Updated
সাধ পূরণ
নিঃশব্দে চোখের জল ফেলছিলেন মণিকা।
কতকাল আগে এই শ্বশুরবাড়িতে ঢোকা।খুব অল্পবয়সেই ছেলে পেটে থাকতেই বিধবা তার শাশুড়িমা ইন্দিরাদেবী।ইস্কুলের দিদিমণি মণিকা কোনোদিন তাঁর অন্যায় শাসনও অমান্য করেননি ওঁর অতীতের কথা ভেবে।নিজের দুই ছেলেমেয়েকেও শাসন করার অধিকার মণিকার ছিলোনা।স্বামী চিরকালের আত্মমগ্ন এক মানুষ। সংসারের সব ঝক্কি মণিকার।শাশুড়িমা অত্যন্ত নিয়মনিষঠা আর অনুশাসনের মধ্যে চিরকাল নিজেকে বেঁধে রেখেছেন।এখন ছেলেমেয়ে দুজনেই কাজের সুত্রে বাড়ির বাইরে।ইন্দিরাদেবীও বয়সের ভারে অশক্ত ,কিন্তু তেজ একইরকম।আজ ,নববর্ষের দিনে মণিকা একটু বেরিয়েছিলেন পরিচিত দোকানে হালখাতা করতে।স্বামী যথারীতি নিজের ঘরে বইমুখে।মণিকার ফিরতে একটু দেরিই হলো।ফিরেই তাড়াতাড়ি রান্নাঘরের দিকে গেলেন,ইন্দিরাদেবির দুধ খই খাবার সময় হয়ে গেছে।যেতে গিয়ে দেখলেন রান্নাঘরেআলো জ্বলছে।দরজার কাছে গিয়ে ভিতরে উঁকি মেরে দেখেন-৮৪বছরের ইন্দিরাদেবী তাকের উপরে রাখা মাছের ঝোলের বাটিতে আঙ্গুল ডোবাচ্ছেন আর মুখে দিচ্ছেন।
তাকে দেখে পাছে অপ্রস্তুত হযে পড়েন,তাই আড়াল থেকে চোখের জলে ভাসতে ভাসতে মণিকা দেখতে থাকেন নববর্ষের দিনে এক অকাল বিধবার অপূর্ন স্বাদের সাধপূরণ।