|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় কমলিকা দত্ত

রং নাম্বার
–হ্যালো,হ্যালোওও
— হ্যাঁ, কে বলছেন?
— আজ্ঞে রঘুপতি শাসমল। বলছি দাদা চাঁদে এক কাঠা জমির বন্দোবস্ত কিন্তু আপনাকে করে দিতেই হবে।
— আরে? আপনি আবার ফোন করেছেন? যতসব…
— আরে শুনুন না
(ফোনটা কেটে দিলেন হারাধন চাটুজ্যে)
এবছর ভোটে দাঁড়িয়েছেন। অমুক পার্টির হয়ে তালগাছ চিহ্নে। প্রচার চলছে রমরমিয়ে। মঞ্চ কাঁপিয়ে ভাষণ, আর মানুষের হাততালিতে ফেটে পড়ছে ময়দান।
আবার ফোন
— হ্যালো দাদা,পায়ে পড়ি আপনার। আপনি পারেন না এমন কিচ্ছু নেই। বলছি আমার সামান্য সাধটুকু…
— আরে ধূর মশাই। চিনি না জানি না যত্ত পাগল, বলে কিনা চাঁদে জমি চাই। আর একবার ফোন করুন, দেখুন কি করি…
—- দাদা আমি চিনবনা আপনাকে! আপনি আমাকে চেনেন না খুব স্বাভাবিক। কিন্তু আমি আপনার ফ্যান হয়ে গেছি। বাকী জীবন আপনার শ্রীচরণে।দাদা আমার এক কাঠা হলেই হবে।
— ডাক্তার দেখান। বদ্ধ উন্মাদ !
— দাদা চাঁদে অল্পবিস্তর জমির ব্যবস্থা করে দেওয়া কি কোনো ব্যাপার আপনার কাছে?
— আরে তুই কে রে? চাঁদে জমি কিনবি? বাপের এলাচ চাষ আছে নাকি? অলীক স্বপ্ন দেখিস দিনে?
— কি বলছেন দাদা! আপনি অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি নিজের কানে শুনেছি। আপনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছেন রাজ্যের প্রতিটি বেকার চাকরি পাবেই।এইটে যদি আপনার দ্বারা সম্ভবপর হয়, তবে চাঁদে এক কাঠা জমি দিতে পারবেন না আপনি? তা কি হয়?
রসিকতা করবেন না দাদা।আমি কিডনি বেচে টাকা পয়সা সব রেডি করে ফেলব।শুধু একটা কাঠা পাইয়ে দিলেই হবে।
সাত বছরের প্রেম। ডুবতে বসেছে।খালি পকেটে,খালি পেটে হাতে হাত ধরে, আর কত চাঁদ দেখি। বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে।
আমিও আপনার ওপর অটুট ভরসা রেখে আজ প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি… হারুদা কে ক্ষমতায় আসতে দাও , চাঁদেই গায়ে হলুদ হবে। হ্যালো দাদা…
— সরি, রং নাম্বার।