|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় মিতালী চক্রবর্তী

গুণ
অমৃতার সঙ্গে কফিশপে বসে আছে তনয়া। মনপটে শৈশবের স্মৃতি। দু’বান্ধবীর একত্রে স্কুল যাওয়া, খেলা, টিফিন ভাগাভাগি আরো কত কী! তখন অমৃতা বলতো,”তনয়া তোর মতন মেয়ে সবাই চায়। তুই পড়ালেখায় কত ভাল,গান-বাজনা আর হাতের কাজেও তুই তেমনই পারদর্শী!”
অমৃতার ডাকেই অতীত থেকে বর্তমানে প্রবেশ তনয়ার। অনেক দিন পর দু’বান্ধবী মুখোমুখি। কিছু সাধারণ কথাবার্তার পরেই অমৃতা বলছে, “তুই গান-বাজনা, ক্যারিয়ার সব ছেড়েছুঁড়ে কী অমোঘ মন্ত্রবলে নিজের সংসারটা ধরে রেখেছিস সকলের কথা মেনে। আমিই পারিনা রে। খোটাও শুনতে হয় সেজন্য। স্বপ্নগুলো যে হাতছানি দিয়ে ডাকে…”
তনয়ার মুখে অন্ধকার রাতের ছায়া। মনেমনে ভাবছে, সেই কবে থেকে নিজের ইচ্ছেগুলো পদদলিত করে পরিবারে শান্তি আর সকলের মন জয় করার উদ্দেশ্যে ভুলেই গেছে কিছু স্বপ্ন তারও আছে। কিন্তু ভীরুতা কাটিয়ে নিজের মনের মতন চলার ইচ্ছেটাকেই যে মেরে ফেলেছে তনয়া। অমৃতা আবারও বলছে,”তুই নজিরবিহীন, সত্যি… তুইই পারিস!”
তনয়ার মনের আকাশে সংশয়। নিজের ইচ্ছেগুলোকে অবদমিত করে রাখা কি সত্যিই গুণের?