• Uncategorized
  • 0

|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় সুব্রত সরকার

গঙ্গাজল

” ভোটবাবুরা এয়েচেন। ওঠো।”
উঠতে পারছেন না বৃদ্ধা। বউমা আবারও বলল,” ভোট দেবা না! দ্যাখো কত সোন্দর সব ব্যবস্থা।”
অন্ধকার ঝুপড়ি ঘর। মলিন একটা বিছানা। সেখানে কেমন বেঁকে কুন্ডলি পাকিয়ে আশি পেরনো বৃদ্ধা প্রায় অচেতন হয়ে শুয়ে আছেন। কানে বউমার কথা গেল কি গেল না বোঝা গেল না।
বাড়ির উঠোন জুড়ে ভোটবাবুরা। সরকারী আদেশ, এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশি পেরনো এই সব ভোটারদের ভোট নিয়ে আসতে হবে। তাই তারা এসেছেন সদলবলে। সঙ্গে অস্ত্রধারী জওয়ানরা। জওয়ানদের ভারী বুটের শব্দে মাটি কম্পমান।
বউমা এবার একটু বিরক্তি নিয়ে বলল,” কতা কানে যাচ্চে না বুজি। উঠবা না! ওনারা আর কত দাড়াঁয়ে থাকবেন?”
আমি এই ভোটবাবুদেরই একজন। মাইক্রো অবজার্ভার। আমার কাজ শুধু সব কিছু অবজার্ভ করা!
রোদে পোড়া, ভাঙ্গা বাড়ির জরাজীর্ণ উঠোনে দাঁড়িয়ে আমি তাই পর্যবেক্ষণ করছি। নিজেই নিজের কাছে বিড় বিড় করছি, “সরকার বাহাদুর লোক পাঠিয়েছে… তোমার খোঁজ নিতে নয় গো, ভোট নিতে! তুমি ওঠো, ভোট দাও। তোমার ভোটটা যে বড় দামী বুড়িমা!”…
শতছিন্ন চাদরে ঢাকা মলিন তক্তা ছেড়ে বুড়িমা কখন উঠে বসে ভোটটা দিয়ে গণতন্ত্রের গায়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে দেবেন, সেই অপেক্ষায় আমরা চোদ্দজন রাজ পেয়াদা অধীর হয়ে রয়েছি!.
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।