ছোটবেলা থেকে পলাশফুল খুব ভালোবাসে ঈশানী। বসন্ত এলে যখন থোকা থোকা লাল পলাশ ফোটে, তখন ও আর স্থির থাকতে পারে না। বুকের মধ্যেটা উথালপাথাল করে। নেট সার্চ করে ও দেখে। পুলকিত হয়। কলেজে যাওয়া-আসার পথে কোথাও কৃষ্ণচূড়া বা শিমুল গাছে লাল আগুন দেখলে ঈশানী দাঁড়িয়ে যায়। দু’চোখ ভরে দেখে। বন্ধুরা হাসতে হাসতে ঠাট্টা করে, ‘তোর নাম ঈশানী না রেখে পলাশী রাখা উচিত ছিল। আর তোর জন্মটা কলকাতা না হয়ে পুরুলিয়ার টাঁড় মাটিতে হলে ভালো হয়।’ ঈশানী হাসত।
তাই কলেজ বন্ধু শৌনক শিশির রূপালীরা যখন প্রস্তাব দিল, ‘পুরুলিয়ায় বরন্তী বলে একটা জায়গা আছে। সেখানে লেকের ধার ঘেঁষে, পাহাড়ের কোলে এই সময় খুব পলাশ ফোটে। দারুণ। সবাই বেড়াতে যায়। ভালো রিসর্ট আছে । একরাত থেকে পরের দিন চলে আসব। যাবি?’
ভাবার কোন প্রশ্নই নেই। ঈশানীর সারা বুক জুড়ে তখন পলাশের তীব্র দহন । বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি বলে, ওরা বরন্তী গিয়েছিল। সারাদিন লাল পলাশে মাখামাখি। কিন্তু শহরে ফিরেছিল ঈশানী ধ্বস্ত ছিন্ন রক্তাক্ত পলাশ হয়ে।