|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় অঞ্জলি দে নন্দী, মম
by
·
Published
· Updated
নববর্ষ
ভোর। পয়লা বৈশাখ। আট বছরের অঞ্জু খিড়কি ঘাটে টপটপ করে একুশটি ডুব দিয়ে স্নান করে, ভিজে পোশাকে ঘাটের পাশে জোড়া শিবের সামনের বিরাট যুক্ত দুয়ারে রাখা দুটি সাজি নিয়ে , আশপাশের গাছ থেকে টগর, কোলকে, ধুতরো, আকন্দ, বেল ফুল ও পাতা তুলে শ্রী রামেশ্বর ও শ্রী বানেশ্বর দেবের ঘরের দরজার শেকল খুলে রেখে আবার শেকল দিয়ে দিল।
সকাল আটটায় নিত্যপুজারী এসে পূজো করলেন। এবার অঞ্জু তাঁকে ডেকে নিয়ে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গেল। শিবের দুয়ার থেকে তিন মিনিট হেঁটে গিয়ে অঞ্জুদের বাড়ী ঢুকতে হয়। অঞ্জুদের ঠাকুর ঘরে আজ শ্রী গণেশ ও শ্রী লক্ষ্মীর পূজো হয়, লাল মলাট নতুন খাতার ওপরে মাটির মূর্তি বসিয়ে। আর ঐ খাতায় বামুন ঠাকুর সিঁদুর ও আঙ্গুল দিয়ে লেখেন, ” ওম্ শ্রী গনেশায় নমঃ ” আর স্বস্তিক চিন্হ আঁকেন। ওদের পুরোনো আমলের বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দী ভাষায় বই প্রকাশনার ব্যবসা।
পূজো হয়ে গেলে ওরা সবাই মিলে সারা পাড়ায় বাক্স ভরে লাড্ডু ও ক্যালেন্ডার বিলোয়।
অঞ্জুকে বাড়ীর সকলেই নব বস্ত্র উপহার দেয়। ওর মোট একুশটি নতুন ফ্রক হয়। ও সবগুলিই ঐ দিন পড়ে ও ওর মা ফোটো তোলে। ওর বাবা ওকে প্রতি নববর্ষের দিন সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে সোনার দোকান থেকে একটি করে সোনার কলম কিনে দেয়। আর ডায়েরীও কিনে দেয় বাজার থেকে। ও কলমটি দিয়ে ঐ ডায়েরীতে ছড়া লেখে। পরে বাবা ওগুলিকে ছাপিয়ে বই বানায়। সকল বাচ্চার বাবামা ঐ বই কিনে তাদের সন্তানদের দেয় ও তারা পড়ে খুব আনন্দ পায়।