সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৩৯
বিষয় – হারিয়ে যাওয়া শৈশব
ব্রাত্য খেলার মাঠ,খেলা ও সচল বন্ধু বান্ধব
আমরা যখন আমাদের শৈশবের ও কৈশোরের দিকটা ফিরে তাকাই মনে হয় হারিয়ে যাই সুদূর কোন প্রান্তে ।মনে পড়ে যায় কত না সুন্দর মধুর সবুজ স্মৃতি। শত চেষ্টা করলে ও সেদিন ফিরে পাবো না ।পাবোনা খেলার মাঠ। পাবোনা সেদিনের সেই খেলা, পাবোনা সচল বন্ধু। সত্যি বলতে কি এখন সবই আছে তবে সব ডিজিটাল।না আছে দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটি করার মত প্রকাণ্ড খেলার মাঠ, না আছে হারিয়ে যাওয়া সেই সব খেলাধুলা।
তখন সময়সূচী বাঁধাধরা ছিল না। তবুও অদৃশ্য বাঁধা সূচি ছিল।
সকাল-সন্ধ্যায় পাঠাভ্যাস । দুপুরের স্কুল,বিকালে বন্ধুদের সাথে কতোনা খেলা। লুকোচুরি ,পুতুল খেলা বুড়ি বসন্ত, মার্বেল ,লুডো ,বাঘ বন্দি, তাস ইত্যাদি হাজার খেলা। যা এখনের শৈশবের কাছে অধরা।খেলা তো দূরের কথা এসব খেলার নাম হয়তো তারা জানে না শোনেও নি। নেই খেলার মাঠ ও। তখন ছিল বন্ধুদের সাথে সব সময় আড়ি ভাব আবার জড়াজড়ি বন্ধুত্ব। অভিভাবকরা ডাকলে তাদের কথা শুনে গিয়ে আবার খেলায় মেতে যাওয়া। বন্ধু মানে তখন ছিল সত্যিকারের এমন এক বন্ধুত্ব গলাগলি, আড়িভাব, দলাদলি ,না দেখে থাকতে না পারা ইত্যাদি অনুভূতি। এখনের মতো ডিজিটাল বন্ধুত্বে ইচ্ছে না হলে ব্লক করার মতো নয়। খেলাটাও পাঁচ ইঞ্চি ছয় ইঞ্চি সাত ইঞ্চি স্মার্ট ফোনের গভীরে ঢুকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বন্ধুদের সঙ্গে নয়। এ আবার এমন বন্ধু ,না চেনাজানা না দেখা। আবার সন্তর্পনে বন্ধুত্ব রাখতে হবে পাছে ডিজিটাল ক্ষতি করে দেয়।
এখন নিজেকে খুব গর্বিত মনে করি কারণ মনে হয় আমরা সত্যিকারের শৈশব উপভোগ করতে পেরেছি। শৈশবটা হারিয়ে ফেলে এখন কষ্ট হয়। কষ্ট হয় বর্তমান শিশুদের দেখে, যারা না পায় বাইরের জগৎ, না পায় খেলা-ধুলা, না পায় প্রকাণ্ড মাঠের দেখা, না পায় প্রকৃত বন্ধু সুলভ অনুভূতিপ্রবণ বন্ধু ।হয়তো সামনের দিনে এই বর্তমান শৈশব আরো কংক্রিট হয়ে যাবে। এখনের শৈশব মানেই যান্ত্রিক জীবন, প্রাণোচ্ছ্বাস হীনতা।
দুনিয়া যেভাবে এগোয় মানুষকে সেইভাবেই অভিযোজিত হয়ে যেতে হয়।তাই হয়তো আমাদের ফেলে আসা শৈশব, খেলার মাঠ, খেলাধুলা, বন্ধু আর কোনদিন ফিরবে না।
যন্ত্রমানব শিশুগুলো বিষণ্নতায় ভুগতে থাকবে। হে ঈশ্বর বর্তমান ও সুদূর ভবিষ্যতের শিশুদের মন গুলো ভাল রেখো।