• Uncategorized
  • 0

কবিতায় বলরুমে জি কে (গুচ্ছ কবিতা )

পুতুল সিরিজ

১ |
দুপুর ছুঁয়ে শূন্যের দিকে ভেসে আছে গোলাপি চুলের পুতুলগুলো হাত ভেঙে
কানে ভেসে আসে জলের অনেক নীচের সবুজ শব্দ ,
চোখের গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যায় গোপন সংসার-অভিসার
রোদটানা মর্মের শিকড়ে আটকে আছে স্মৃতিছায়াজলপাথর ,
ধাক্কা খেতে খেতে পাঁজর খুলে বেরিয়ে আসে নৈঃশব্দের সহস্র পাখির ডানার বাতাস পালক
অর্ধঘুমন্ত মুখের উপর ঝুঁকে আছে স্তব্ধতার আকাশ
নিশ্চল নখের মেঘে আশ্চর্য মায়ায় জেগে ওঠে চাঁদযন্ত্রণার সরু রুপোলি ফালি
করতলের উপর মীমাংসাহীন সংকল্পের বুদ্বুদ ভাসে , ফেটে ওঠে পরস্পর , দুঃখে
নিঃসঙ্গতায় গভীরতা বাড়তে থাকে ক্রমে
বিষাদ বৃক্ষের ছায়ায় খুঁজে যাই হারানো জন্মান্তর ,
অনন্ত ফেনায় ঢাকছে বাঁশিরূপ লুপ্ত বনশরীর
পুতুলগুলো জেগে ওঠে পুনরায় আবারও।।
২ |
রাত্রিবাতাসতরঙ্গে দুলে ওঠে মেঠো শতাব্দীর ফুলে ওঠা জলাগুনে
আশ্চর্য শবের মুখ
অক্ষরে অক্ষরে জলের ঘন্টা বেজে ওঠে
পঞ্চমুন্ডের উপর নিরুদ্দেশে যায় ধুলোর ভেলা প্রতি সাধন অঙ্গে
জলস্তম্ভ ভেঙে ওড়ে আয়ু সহস্র ফনায়
নিভৃতে জেগেছে রিপুর কৃৎকলা
ভেসে যায় অক্ষর ভেজা কাগজের দূরে
অপহৃত প্রবল লাফ মারি বেলাশেষের ছায়ায় পেটের ভিতর
বাতাস জুড়ে কেঁপে ওঠে জলজোনাকির ছাইমেঘে আসীন পদচিহ্ন
আঁকড়ে ধরি শক্ত দু’বাহুতে মধুসত্যের বজ্রদেহ
উঠে আসে কখনো নক্ষত্রের মৃত ধ্বনি পতঙ্গপ্রাণে
তুমি ক্ষুধিত মৃতের পাহারায় শবরক্ষক
গান ওঠে অফুরন্ত শোকে
হৃৎপিণ্ডের ফোয়ারায় জ্বলে ওঠে শরীরী তন্ত্রচক্র
একা পড়ে আছি সহজ কতকাল বাতাস ঘুমের দুয়ারলিপির দেওয়াল জুড়ে প্রত্ন শামুকের খোলায় এফোঁড় ওফোঁড়
ভেসে ওঠে ঢেউ তুলি ভঙ্গিমায়
রক্তঅন্ন গৃহের দর্পণে অদৃশ্য জিভের আড়াল
ঘন হয়ে আসে অনিদ্রার চিরঅন্ধকার
খুলে যায় দেহরন্ধ্রে তৃতীয় দুয়ার
আরও ঘন ছায়াগতিচাকার দাগ
খন্ড টুকরোয় ছায়া ছায়া শিথিল সংসারবাক্যে ডেকে ওঠে খনা মা
শরীর থেকে খসে পড়ে জিহ্বা
জিহ্বা নড়ে
জিহবা নড়ে
জিহ্বা নড়ে সহস্র ।।
৩ |
বিকেল ওড়া পাখির কারুকাজের নকশা আঁকে মাটির লতা
কাঁধে এসে দোল খায় ঘাসের সবুজ প্রত্নকঙ্কাল
বুকের উপর জড়ো করা শীতল ঘুমের ফেনায় ভাসছি ,
ভেসে উঠি
ভাসে যাই স্মৃতির কচুরিপানায়
শূন্যে মেলা ছায়ার পাকানো রোদের গন্ধেভোজে উঠে বসি
ভালো লাগে এভাবে ছুটির দিনগুলো ফিরে ফিরে এলে,
বাতাস ফাটা গরম সূর্যের দিনে দুপুর ভিক্ষায় জমে ওঠে অবিরল নুড়ির সিকি-আধুলি
এখান থেকেই হারিয়েছি বাবাকে, মুঠো ভর্তি ধুলো ওড়ে
মা দিনের আলো ফুটিয়ে ইটের ফাঁকে গুঁজে রাখে
জমে ওঠে বসন্তহীন বিষাদ দেহের উনুন শতাব্দীর শ্যাওলায়
তালপাকা পুকুরের পশ্চিম পাড়ে একে একে শরীর অস্ত যায়,
পূর্বপুরুষ এর কাঁপা ছায়া নেমে আসে পাঁজরের কিনারে
স্বপ্ননদীর চরে জেগে ওঠা হাজার বছরের ইতিহাস টুং টাং কাঁসা-পিতলের ঢেউয়ে শব্দ তোলে
বাতাসে খোলা চুলের গন্ধ ডুবে আছে গাছতেলকৌটোয়
পেয়ারা বাড়ির আয়নায় জেগে ওঠে সময়
তলিয়ে ওঠে আসবাব ঘুমের শিকড় জড়িয়ে
ছায়াগামী রাত্রির উড়ালে
ঘ্রাণ শূন্যের নাব্যতায় ডোবে পাঁপড়ি পাঁপড়ি জীবনঅশ্রু
জলপতনের বিদ্যুৎ আছড়ে পড়ে চেতনায়
দেখি, অন্ধকারে ধরা সমস্ত হাতগুলো ছেড়ে গেছে উত্তরহীন প্রশ্নে
হলুদ হাড়ে জ্বলে ওঠে দাউদাউ টায়ার পোড়া আগুন
দূরে কল পোঁতা মাঠের সবুজ গোঠে নেমে আসে
মা পলাশের নেতা।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।