• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে দেবদাস কুন্ডু (পর্ব – ২৫)

লড়াইয়ে মিছিল

পর্ব – ২৫

বাইপাসের ধারে একটা বড় নার্সিং হোম।সেখানে সুশান্তকে নিয়ে এসেছি ভাই কমল।স়়ংগে কবিতা পাল।এই নার্সিং হোমের কাজ করে সূরজিত।সে কমলের বন্ধু।সব শুনে সে বলেছিল, চিন্তার কিছু নেই। আমাদের এখানে বিখ্যাত অঙ্ক লোজিসট সার্জন দেশাই আছেন।অনেক জটিল কেঁপে তিনি সাফল্য পেয়েছেন।তাকে আউটডোরে দেখালে সুধন্য সুস্থ হয়ে যাবে।
ডাঃ দেশাই এখনো আসেন নি। প্লেন লেট।তিনি বোম্বাই থেকে আসেন সপ্তাহে একদিন।এক ঘন্টা লেট করে দেশাই এলেন।অন্য পেশেন্ট বাদ দিয়ে প্রথমে সুশান্তকে দেখলেন।হূইল চেয়ারে বসে তিনি চিকিৎসা করেন।এমনকি অপারেশনো করেন।তিনি বললেন, স্পাইনাল কর্ড অপারেশন করলে সুশান্ত সুস্থ্ হয়ে উঠবে।
কবিতার চোখ দুটো চিক চিক করে উঠল।বলল,কতো খরচ হবে?
ছ লাখ।
ছয় লাখ!এতো টাকা কোথা থেকে আসবে?
ও নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না বৌদি।আমি আছি না।এখন আমি দেব পরে তুমি দেবে।হলো তো?
অপারেশনের পর এখন সম্পূর্ণ সুস্থ সুধন্য। কবিতা তার বিয়ের গহনা বেঁচে কমলের দেনা শোধ করেছে।এবং বি ভাঙাতে হয়েছে। বৌবাজারে একটা ছোট ওয়ার্কশপ ছিল সেটা বেচতে হয়েছে।এক রকম নিঃশ্ব হয়ে স্বামীর চিকিৎসা করল।তবু স্বামী সুস্থ আছে এর থেকে আনন্দে
কি আছে।যেন বুক থেকে পাথর নেমে গেছে। দোকান যাচ্ছে সুশান্ত।ব্যবসা করছে।
একদিন রাতে চিৎকার করে উঠলো সুধন্য।বলল,আমিআর পারছি না যন্ত্রনা সহ্য করতে।
দেশাইয়ের সঃগে যোগাযোগ করা হলো।দেশাই বিদেশে।বাধ্য হয়ে আর একজন নাম করা অঙ্ক লোজিসট দেখানো হলো।তিনি বললেন,কেন অপারেশন করতে গেছেন?
দেশাই বললেন যে
তিনি তো ভালো করে জানেন মেটাবোলিজম খোলো করে গেছে। অপারেশন করে কি লাভ?
ডাঃ দেশাইয়ের কাছে আপাকে কে নিয়ে গেছে?
কবিতা পাল বলল, আমার দেওর।
তাকে কে পরামর্শ দিয়েছেন?
সুরঞ্জিত।
কে সুরঞ্জিত?
ঐ হাসপাতালে চাকরি করে।
এবার বুঝতে পেরেছি।এটা ওদের একটা ফাঁদ।যে পেশেন্ট সুস্থ হবে না তাকে অপারেশন করবে।এ পেশেন্ট নিয়ে বাড়ি যান।যেটা দিন বাঁচে বাড়িতে রাখুন।যা খেতে চায় তা দিন।আর আপনি মানষিক ভাবে প্রস্তুত হন।আর কিছু করার নেই।
সুশান্ত এখন বাড়িতে শুয়ে থাকে সারাক্ষণ।তাকে ওষুধ দিতে হচ্ছে।চান খাওয়ানো সব করেছে হচ্ছে কবিতাকে।মাঝে মাঝে সুধন্য বিরক্ত হচ্ছো। যন্ত্রনায় ছটপট করতে। চিৎকার করছে।গালাগাল দিচ্ছে।সামনে যা পাচ্ছে ছুড়ে ফেলেছে। কবিতা পাল ভেবে পারছে না কি করবে?
কবিতা পাল চান করে ঘরে এলো।এখন আর সিঁদুর প্রায় ব্যাপার নেই।সুশান্ত গতমাসে মধ্যমগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটির হাসপাতালে মারা গেছে।এখন মাথার ওপর ছাদ আর দোকান টুকু ছাড়া কিছুই নেই।
সব হারিয়ে এখন সে চান করে এক ঘন্টা ঈশ্বরের কাছে ধ্যানে বসে। ঈশ্বরের স়়ংগে কথা বলে।তার সব শক্তি সে ঈশ্বরের কাছ থেকে পেতে চায় স্বামী হারিয়ে এখন ঈশ্বর হয়ে উঠেছে স্বামীর বিকল্প।
নিজের শরিকী অ়শ বেঁচে সে ওয়ান রুম ফ্লাট কিনে চলে এল চন্দ্রন নগর।একটা ছোটো দোকান কিনে দিল বুটিকের শোরুম।আজ তার উদ্বোধন হলো।
একা একা ফিরছে।মফশল টাউন।একটু রাত হতে চারপাশ নির্জন। অন্ধকার।তার কেমন ভয় ভয় করতে লাগলো।কাগজ খুললেই এখন ধর্ষনের খবর।তার শরীরে এখনো যৌবন রয়েছে।পরমূহূতে মনে হলো ভয় পেলে তার চলবে কি করে তার জীবনে শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়।যার নাম যুদ্ধ। যুদ্ধের স়়ংগে লড়াইয়ে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে না।তবু এক একটা মানুষের জীবনে লড়াই অনিবার্য হয়ে ওঠে।
ঘরে ছেলে মেয়ে দুটো একা রয়েছে। কবিতা পাল পা চালাতে লাগল তাড়াতাড়ি।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।